নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করায় প্রকৌশলীকে মারধর, যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৩

ফেনীতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের টিউবওয়েল স্থাপনে নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন প্রকৌশলী মো. সমেশ আলী। এ ঘটনায় জেলা যুবলীগের সহ সম্পাদক ও ঠিকাদার হুমায়ুন কবিরসহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার আসামিদের (১২ ফেব্রুয়ারি) আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাদেরকে ফেনী জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, ফেনী সদর উপজেলার ভূমি অফিসে টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ পায় যুবলীগের ঠিকাদার হুমায়ুন কবীর। কাজ নিম্নমানের হওয়ার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে সরেজমিনে তদন্তে যান উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সমেশ আলী । সঠিকভাবে কাজ করতে বললে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে প্রকৌশলীকে মারধর করেন হুয়ায়ুন কবীর।

প্রকৌশলী মো. সমেশ আলী অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমাকে এসিল্যান্ড সাহেব ফোন দিয়ে বলেন, 'প্রকৌশলী সাহেব এখানে অধিদফতরের টিউবওয়েল স্থাপনের কাজে দুই নম্বরি হচ্ছে, আপনি একটু আসেন।' আমি ওইখানে গিয়ে দেখি কেউ নাই। দুই থেকে তিন মিনিট পর আইয়ুব নামে একটা ছেলে এলো। এর একটু পরেই হুমায়ুন সাহেব তার দলবল নিয়ে এসে আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আমাকে প্রচুর মারধর করা হয়। ভূমি অফিসের লোকজনের সহায়তায় ঠিকাদার হুমায়ুন কবির, জিলানী ও দেলোয়ারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। আইয়ুব মিস্ত্রি নামে একজন পালিয়ে যায়। আহত সমেশ আলীকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় চার জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, প্রকৌশলী সমেশ আলীকে মারধর করার পরে তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশ যায়। হুমায়ুন কবিরসহ চার জনের নামে মামলা হয়েছে এবং এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় ১ নম্বর আসামি হুমায়ুন কবির শহরের গাজি ক্রস রোডস্থ মরহুম মকবুল আহমেদ ছেলে। তিনি জেলা যুবলীগের সহ সম্পাদক। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ঠিকাদার।

ফেনীতে প্রায় সাড়ে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে টিউবওয়েল স্থাপন প্রকল্পের চার হাজার ৫২৮ টির মধ্যে দুই হাজার ৩১৪টি নলকূপের কাজ শেষ হয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফেনী সদর ভূমি অফিসে টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ শুরু করেছিলেন ঠিকাদার হুমায়ুন।