কারাগার থেকে কয়েদি নিখোঁজ: কারা অভ্যন্তরে তদন্ত কমিটির তল্লাশি

নিখোঁজ কয়েদিকে খুঁজতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে তল্লাশি চালিয়েছে তদন্ত কমিটি। সোমবার (৮ মার্চ) দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারাগারের ভেতরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে এই তল্লাশি চালানো হয়। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক খুলনা বিভাগীয় কারা উপমহাপরিদর্শক মো. ছগির মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পালিয়ে যেতে কারাগারের অভ্যন্তরে কোথাও আটকা পড়ে আছে কিনা সেটি নিশ্চিত হতে এই তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ছগির মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কারাগার থেকে রুবেল নামে এক কয়েদি নিখোঁজের ঘটনায় আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আজ (সোমবার) প্রথমদিন আমরা কারা অভ্যন্তরে তল্লাশি চালিয়েছি। সবকিছু যাতে ভালোভাবে তল্লাশি করা যায়, সেজন্য আমরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে এই তল্লাশি পরিচালনা করেছি। আজ পুরো এলাকা তল্লাশি করা সম্ভব হয়নি। তাই আগামীকালও তল্লাশি চালানো হবে। কারাগারের অভ্যন্তরে সব ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকগুলোতে তল্লাশি চালানো হবে। এরপর যাবতীয় সব বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।’

নিখোঁজ কয়েদি ফরহাদ হোসেন রুবেল কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের পঞ্চম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাদারবাড়ি রেলবিট এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গত ৯ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানামূলে রুবেলকে কারাগারে পাঠান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। শনিবার (৬ মার্চ) সকালে নিয়মিত বন্দি গণনার সময় রুবেলকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। এরপর খোঁজ নিয়ে তার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে এ ঘটনায় একই দিন সন্ধ্যায় নগরীর কোতয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর রাতে একই ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়। পরদিন রবিবার এই ঘটনায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. রফিফুল ইসলাম ও ডেপুটি জেলার মুহাম্মদ আবু সাদ্দাতকে প্রত্যাহার করে কারা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি একই ঘটনায় কারারক্ষী নাজিম উদ্দিন ও সহকারী কারারক্ষী ইউনুস মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এই ঘটনায় এই পর্যন্ত দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কারা অধিদফতর থেকে, অন্যটি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়। খুলনা বিভাগীয় কারা উপপরিদর্শক ছগির মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদকে সদস্য করা হয়েছে।

অন্যদিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমনি আক্তারকে আহ্বায়ক করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে  নগর পুলিশের এডিসি (ট্রাফিক-উত্তর) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. মাজহারুল ইসলামকে সদস্য করা হয়।