পুলিশ আমাকে লাঞ্ছিত করে সম্মানে আঘাত করেছে: কাদের মির্জা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জে রাজনীতিতে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনা দিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। সোমবার (২৯ মার্চ) বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে কাদের মির্জা স্বাক্ষরিত বসুরহাট পৌরসভার প্যাডে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‌'আমি বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, রবিবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টায় করোনা সময়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌর এলাকায় করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বিশেষ অবদান রাখায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম ও চার জন মাঠ পর্যায়ের কর্মীকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত ছিল। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যথা সময়ে পৌরসভা কার্যালয়ে উপস্থিত হন। তবে পৌর কার্যালয়ের সামনে ডিউটিরত পুলিশ পরিদর্শক সামসুদ্দিন ও এডিশনাল এসপি শামীম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিমকে পৌরসভা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেন। ওই সময় আমি ডা. সাহেবকে পৌরসভা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করি। আমার অনুরোধ উপেক্ষা করে ডা. মো. সেলিমকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি এবং উল্টো তারা আমাকে লাঞ্ছিত করে।'

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‌'আজ আমার দলের গ্রেফতার তিন কর্মীকে কোর্টে জামিন শুনানির জন্য উপস্থিত করার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাদের কোর্টে হাজির করা হয়নি। বর্তমানে জেলে আমাদের ৯ জন নিরীহ নেতাকর্মী আছেন। তাদের উপর জেলে অনেক অত্যাচার করা হচ্ছে। তাদের আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় লোকজন দেখা করতে গেলে তাদেরকে দেখা করতে দেয় হচ্ছে না। অথচ প্রতিপক্ষের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের পক্ষের গ্রেফতার হওয়া সন্ত্রাসীদের দেখতে গেলে তাদেরকে ভিআইপি হিসাবে দেখা করতে দেওয়া হয়।'

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কাদের মির্জা আরও অভিযোগ করেন, ‌'৯ মার্চের সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে আমার পাঁচ নেতাকর্মী নোয়াখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিল। সিভিল সার্জন নোয়াখালীকে অনেক অনুরোধ করার পরও তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। বর্তমানে তারা ঢাকা ও নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছে। কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আমার নির্মিত আইসোলেশন সেন্টার ভেঙে অস্ত্রধারীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে এবং তার উপজেলা চত্বরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একত্র করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা চালায়। এই ইউএনও আমার দলের একজন সহ-সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন মির্জার কাছে কেন যান এবং একজন সাংবাদিককে বলেছেন মির্জাতো দূরের কথা ওবায়দুল কাদেরের কথাও আমি শুনবো না। গতকাল পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে যান। এর মধ্যে একটির বৈধ কাগজপত্র ছিল, দুটির বৈধ কাগজপত্র ছিল না। কোম্পানীগঞ্জে চলাচলকারী মোটরসাইকেলের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ অবৈধ। এ সব অবৈধ মোটরসাইকেল কোম্পানীগঞ্জ থানার সহযোগিতায় চলাচল করে। কোম্পানীগঞ্জের দুর্নীতিবাজ ওসি, মাদক সম্রাট দুর্নীতিবাজ ওসি (তদন্ত) এবং কোম্পানীগঞ্জ থানার গোলঘরের সালিশ বাণিজ্যের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এসআই মাহফুজ কোম্পানীগঞ্জের সব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। উপরোক্ত কারণে পৌরসভার একজন নির্বাচিত মেয়র হিসেবে আমার সম্মানে আঘাত লেগেছে। আমি শুধু বলবো যারা এ সব ঘটনা ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার জনতার আদালত এবং আল্লাহর আদালতে একদিন হবে ইনশাআল্লাহ।'