ডাকবাংলোতে জুয়ার আসর, মেম্বারসহ গ্রেফতার ৮

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর জেলা পরিষদে (ডাকবাংলো) প্রতিদিন রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বসে জুয়ার আসর। এতে অংশ নেন চিহ্নিত ও প্রভাবশালী জুয়াড়িরা। অবশেষে অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলা অবস্থায় এক জনপ্রতিনিধিসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শনিবার (০৫ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রায়পুর শহরের উপজেলা পরিষদ সড়কের জেলা পরিষদের ডাকবাংলো থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রোববার (০৬ জুন) দুপুরে জুয়া আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তারা হলেন রায়পুরের সোনাপুর ইউপি সদস্য আবদুল্যাহ আল মামুন (৩৬), জুয়াড়ি মো. কামাল হোসেন (৪৮), ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মামুন (৩০), আবদুল্যাহ আল মামুন (৩৫), ফজলুল হক (৫২), মো. রাসেল (৩৯), মো. বিল্লাল হোসেন (৩৩) ও জামাল হোসেন (৩৮)।

এ ঘটনায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল কাদের রিয়াজ জড়িত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর রিয়াজ বলেন, আমার ব্যাপারে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, রায়পুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল কাদের রিয়াজের কাছ থেকে সাড়ে তিন বছর আগে ডাকবাংলো মিলনায়তন লিজ বাতিল করে নিজেরাই পরিচালনা করছে জেলা পরিষদ। সেখানে বিয়ে ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দিবসের অনুষ্ঠান হয়।

বর্তমানে ভবনের দোতলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভ্রাম্যমাণ ছোট ব্যবসায়ীরা ভাড়ায় বসবাস করছেন। তার পাশেই ডাকবাংলোর আবাসিক কক্ষে সরকারি কর্মকর্তারা রাতযাপন করেন। বাংলোর পেছনের দুটি কক্ষে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তত্ত্বাবধায়ক বিল্লাল হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, বিল্লালের ছেলে মামুন হোসেনের সহযোগিতায় স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট সারারাত জুয়ার আসর বসিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় করে। জুয়ার আসরে জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাসহ চিহ্নিত জুয়াড়িরা অংশ নেন। এছাড়া সেখানে মাদকের আড্ডাও বসে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা ব্যবস্থা নিতে কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বললে ব্যবস্থা নেয়নি।

রায়পুর জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধায়ক বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি মসজিদে ছিলাম। এ সম্পর্কে কিছুই জানি না।

লক্ষ্মীপুর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, গোপনে সংবাদ পেয়ে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের এসআই টিপু সুলতান জুয়ার আসর থেকে কাউন্সিলর রিয়াজকে বের হতে দেখেছেন। তবে তাকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। এক মেম্বারসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা কুল প্রদিপ চাকমা বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সকালে সংবাদ পেলাম। সংশ্লিষ্টরা যদি জড়িত থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।