উত্তপ্ত বসুরহাট পৌরসভায় ১৪৪ ধারা জারি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার রূপালী চত্বরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বেলা ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউল হক মীর।

তিনি জানান, ১৪৪ ধারা চলাকালে বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় ব্যক্তি, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, গণজমায়েত, সভা, সমাবেশ, মিছিল, র‌্যালি, শোভাযাত্রা, যেকোনও ধরনের অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পৌর শহরে চার জনের বেশি মানুষ জমায়েত হতে পারবে না।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট বোন রোকেয়া বেগমের বসুরহাট থানার পোল সংলগ্ন বাসভবনে পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা হামলার চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এর আগে, রোকেয়া বেগমের বাসায় হামলার প্রতিবাদে আজ বিকেল ৩টায় রূপালী চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও সেতুমন্ত্রীর ভাগিনা মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু। অপরদিকে, কাদের মির্জার ব্যক্তিগত সহকারী ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন মাহমুদ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই স্থানে একই সময়ে উপজেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে পাল্টা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়।

রোকেয়া বেগম ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জার ছোট বোন। এছাড়া কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাতের মা। তাহেরা বেগম (৬৯) কাদের মির্জার বড় বোন এবং তার প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশীদ মঞ্জুর মা।

বুধবার রাত ১০টায় বসুরহাট থানার সামনের সড়কে কাদের মির্জার দুই বোন তাহেরা বেগম ও রোকেয়া বেগম উপজেলা আওয়ামী লীগের অনুসারী নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাসায় হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সেতুমন্ত্রীর ছোট বোন রোকেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, কাদের মির্জার অনুসারীরা এই হামলা করেছে। সে এখন কোম্পানীগঞ্জের গডফাদার। পুলিশ তাকে প্রটেকশন দিচ্ছে। সে বিশাল ক্ষমতাধর। মির্জার বাহিনী বাসায় হামলা করে আমার ছেলে রাহাতকে খুঁজতে থাকে। আমি তাদেরকে বলি, আমি মন্ত্রীকে ফোন দিচ্ছি। তারা বলে, মন্ত্রী কী করবে? এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

ফখরুল ইসলাম রাহাত বলেন, কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্বের জেরে কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে আমার বাসায় হামলা করা হয়েছে। এ সময় তারা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে।

এসব বিষয়ে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, এ ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে আমার অনুসারীরা জড়িত নয়। আমি শান্ত আছি। আমাকে উত্তেজিত করার জন্য এসব করা হচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, যেকোনও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।