আহমদ শফীর পাশেই বাবুনগরীকে দাফন

অবশেষে হেফাজতের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর কবরের পাশেই চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা কবরস্থানে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে দাফন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাত পৌনে ১২টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়। হেফাজতের নেতা সালাহউদ্দিন নানুপুরী বাংলা ট্রিবিউনকে দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রাত ১১টা ২০ মিনিটে হাটহাজারী দারুল উলুম আল মাদ্রাসা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। 

একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। সকালে অসুস্থবোধ করলে দুপুর ১২টার দিকে বাবুনগরীকে নগরীর সিএসসিআর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তার দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। দাফন নিয়ে হেফাজত নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা দেয় মতবিরোধ

মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা বাবুনগরীকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় কবর দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। অন্যদিকে পরিবারের লোকজন তাকে ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের পক্ষে অবস্থান নেন। এ নিয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করার পর থেকেই জটিলতা চলছিল।

প্রথমে হাসপাতাল থেকে বাবুনগরীর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পথে মাদ্রাসার ছাত্ররা মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স জোরপূর্বক মাদ্রাসায় নিয়ে যান। এরপর হেফাজত নেতারা বৈঠক করে বাবুনগরীকে মাদ্রাসায় দাফন ও জানাজার ব্যবস্থা করেন। 

বিকালে তার মরদেহ ফটিকছড়ির বাবুনগরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার জন্য বিক্ষোভ করেন। প্রশাসনের লোকজনের হস্তক্ষেপে সেখান থেকে মরদেহ হাটহাজারী মাদ্রাসায় নিয়ে আসা হয়। তখন হেফাজতে ইসলামের নেতারা বাবুনগরীকে তার অছিয়ত অনুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান। 

রাত ১১টা ২০ মিনিটে হাটহাজারী দারুল উলুম আল মাদ্রাসা মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়

এরপর হাটহাজারী মাদ্রাসায় নিয়ে আসার পর রাত ১১টা ২০ মিনিটে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাবুনগরীর মরদেহ তার পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্ররা বাধা দেন। একপর্যায়ে ছাত্রদের চাপের মুখে রাত পৌনে ১২টায় বাবুনগরীকে হাটহাজারী মাদ্রাসা কবরস্থানে শাহ আহমদ শফীর কবরের পাশে দাফন করা হয়।

দাফন নিয়ে মতবিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেব তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার জন্য অছিয়ত করে যান। সেই অনুযায়ী তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্রদের চাপে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা সম্ভব হয়নি। মাদ্রাসার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
 
মাদ্রাসার কবরস্থানের পাশাপাশি বাবুনগরীকে দাফনের জন্য পারিবারিক কবরস্থানে কবর খোঁড়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, জানাজার পর মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী সাহেব খাটিয়া ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। উত্তেজিত ছাত্ররা তাকে ধাক্কা দিয়ে মরদেহ মাদ্রাসা কবরস্থানে দাফনের জন্য জোরপূর্বক নিয়ে যান।