বাসাবাড়ি ও মসজিদে ঢুকেছে পানি, মানুষের ভোগান্তি

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে আছে মানুষের ঘর, বাড়ি, দোকানপাট, মসজিদ, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। পানি না নামায় খাগড়াছড়ির গঞ্জপাড়া এলাকার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের আল-আকসা মসজিদে ফজর, জোহরের নামাজ পড়তে পারেননি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

সরেজমিনে মসজিদটি ঘুরে এবং ইমাম মাওলানা মাঈনুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে টানা বর্ষণে মসজিদে পানি উঠে গেছে। ফলে ফজর ও জোহরের নামাজ আদায় করতে পারেননি মুসল্লিরা।

মসজিদের পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে ইমাম জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়ে বারবার আশ্বাস দিলেও তা ঠিক করেনি। গত বছর বেশ কয়েকদিন এভাবেই মসজিদে নামাজ হয়নি।

গঞ্জপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ আলী বলেন, ‘গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ড্রেন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত বরাদ্দের অভাবে তা করে দিতে পারিনি। তবে চলতি বছর আল-আকসা মসজিদটিকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষার জন্য জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত পানি উঠেছে ঘরবাড়িতে

গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জ্ঞানজ্যোতি ত্রিপুরাও আল-আকসা মসজিদের জলাবদ্ধতা দূর করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।

এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের আশপাশে কমপক্ষে ১৫টি এবং পুরো জেলায় প্রায় ৫০টি গ্রামে পানি উঠেছে। অনেক স্থানে ঘরের ভেতরেও উঠেছে পানি। খাগড়াছড়ি শহরের এপিবিএন মুসলিম পাড়া এলাকার রবিউল ইসলাম, রূপনগর এলাকার সজল দাশ, রাজ্যমনি পাড়া এলাকার নেইংরা মারমা, সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুল হক জানান, ঘুম থেকে উঠেই ঘরে পানি দেখে হতভম্ব তারা। গতকাল মধ্যরাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে অনেক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে এবং গবাদিপশুর ঘরে পানি ওঠায় বিপাকে পড়েছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুক্তা চাকমা বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কৃষিজমির কিছু সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন  নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পৌরসভার আওতাধীন কয়েকটি জায়গায় রাস্তার ওপরে পাহাড় ধসে পড়েছে, যা পৌরসভার লোকজন সরাচ্ছে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আনার কাজ চলছে। তবে বৃষ্টি কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকলে পানি নেমে যাবে।’