ইউপি চেয়ারম্যান-সচিবের বিরুদ্ধে খালি চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে টিআর, কাবিখা, এলজিএসপি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পরিষদের তিন মহিলা সদস্য সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য নাছিমা বেগম তার অভিযোগ, তাকে ছয় মাস আগে চেয়ারম্যান সারোয়ার রহমান ভূঁইয়া টিআর, কাবিখা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। তবে বরাদ্দের টাকা পাওয়ার আগেই এ সদস্য নিজের টাকা খরচ করে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেন। পরে প্রকল্পের থেকে টাকা ওঠানোর কথা বলে তার কাছ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব খোরশেদ আলম সোনালী ব্যাংকের খালি একটি চেকে স্বাক্ষর নেন। এরপর তারা টাকা উঠিয়ে নেয়। তবে এ নারী ইউপি সদস্যকে তার পাওনা টাকা দেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যানের কাছে গেলে সচিবের কথা বলেন ও সচিবের কাছে গেলে চেয়ারম্যানের কথা বলে ঘোরাতে থাকেন। একপর্যায়ে টাকার জন্য চাপ দিলে তারা এ নারী সদস্যকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. রাহেলা আক্তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, চেয়ারম্যান তাকে এলজিএসপি প্রকল্পের বরাদ্দ পাইয়ে দেবে বলে প্রথমে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন। পরে প্রকল্পের এক লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি বরাদ্দ দেয়। সেই বরাদ্দ পেয়ে তিনি নিজের টাকায় কাজ করে টাকা চাইলে সচিব খোরশেদ আলম টাকা তুলে দেবেন বলে তার কাছ থেকেও সোনালী ব্যাংকের চেক স্বাক্ষর করে নেন। অনেক ঘোরাঘুরি করেও প্রকল্পের এক টাকাও পাননি তিনি।

৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. ফরিদা বেগমের অভিযোগ, ‘আমাকে গত দুই মাস পূর্বে বর্তমান চেয়ারম্যান সারোয়ার রহমান ভূইয়া টিআর-কাবিখার বরাদ্দ দেন। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার পরে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব খোরশেদ আলম আমাকে টাকা উত্তোলন করে দেবেন বলে সোনালী ব্যাংকের খালি চারটি চেকে স্বাক্ষর নেন। চেক দিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে ৯৩ হাজার ৯৭৮ ও ৭১ হাজার ৪৩৩ টাকা উত্তোলন করে। তবে আমাকে এক টাকাও দেওয়া হয়নি। আমাকে উল্টো হুমকি-ধমকি দিয়ে বলেন, আমি এমপির লোক। রাজনৈতিক নেতারা আমার পক্ষ আছে। পারলে কিছু করেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব খোরশেদ আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান সারোয়ার রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকেই নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।’ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘অভিযোগ দেখে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগের কপি স্থানীয় সংসদ সদস্য (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর প্রদান করেন।