ফাঁদ পেতে অবাধে বক শিকার

নীলফামারীতে বক শিকার থেমে নেই। স্থানীয় শিকারীদের ফাঁদে প্রতিদিন শত শত বক মারা পড়ছে। এতে ছানা বকগুলো অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পাখি শিকার নিষিদ্ধ হলেও তা মানছে না শিকারীরা।

বুধবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে নীলফামারী জেলা শহরের নিউবাপু পাড়ার মিলন পল্লী মহল্লায় দেখা যায়, কয়েকজন মিলে ধানের ক্ষেতে ফাঁদ পেতে বক শিকার করছে। 

ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে আমন ধানে জমে থাকা পানিতে ছোট মাছসহ পোকাগমাকড় খেতে আসে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী ও দেশি পাখি। এসব পাখি শিকারে মেতে উঠেছে স্থানীয় শিকারীরা। তারা ফাঁদ পেতে পাখি ধরছে। বিশেষ করে বকের প্রজননকাল হওয়ায় ধরা পড়ছে ছানা বকগুলো। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সঠিক নজরদারি ও জনসচেতনতার অভাবে পাখি শিকার বেড়েছে।

ধানের ক্ষেতে ফাঁদ পেতে বক শিকার বাড়ছে

বন বিভাগ সূত্র জানায়, বর্ষার পর নদী-নালা ও খাল-বিলের পানি কমতে থাকে। এ সময় আমন ধানের জমিতে ছোট মাছ ও পোকা-মাকড় খেতে আসে বিভিন্ন প্রজাতির বক। এই সুযোগে শিকারীরা বক শিকার করে স্থানীয় হাটবাজারে ও পাড়া মহল্লায় বিক্রি করছে।

স্থানীয় শিকারী সুজন মিয়া জানান, ‘দেশীয় ফাঁদে বক ধরে বিক্রি করি। এবার করোনা মহামারি ও ভাদ্র-আশ্বিন মাসে হাতে কাজ না থাকায় বক ধরে বিক্রি করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে আরিফ নামে এক শিকারী বলেন, ‘বাড়িতে বসে না থেকে ভাইয়ার সঙ্গে বক ধরতে এসেছি। দুই ভাই পাখি শিকার করে সংসার চালাই।’

সঠিক নজরদারি ও জনসচেতনতার অভাবে বেড়েছে পাখি শিকার

নীলফামারী বন বিভাগ কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। মানুষ সচেতন হলে এ ধরনের পাখি শিকার বাড়তো না। সব সময় আইন দিয়ে সবকিছু করা যায় না।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. জেসমিন নাহার জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, পাখি শিকার ও নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ। সচেতনতার অভাবে খাল-বিলে ছুটে আসা নানা প্রজাতির বক ধরা পড়ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। আমরা দ্রুত মাইকিংসহ হাট-বাজারে অভিযানে নামবো।