কৃষকের ধান খেয়ে যায় প্রভাবশালীদের মহিষ

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চর আতাউরে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ একর জমির ধান মহিষ দিয়ে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা গেছে, হাতিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে প্রায় ৩৫ বছর আগে জেগে ওঠা চরআতাউর ভূমিহীনদের মাঝে ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ সালে বন্দোবস্ত দেয় সরকার। ২০২০ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনপ্রতি ১.৫০ একর জমি বুঝিয়ে দেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের চাষাবাদ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। ২০২১ সালের জুনে জমি প্রস্তুত করে চাষাবাদ শুরু করেন কৃষকরা।

কৃষক মো. রফিকউদ্দিন (৭৫) বলেন, আমাদের কোনও জমি নেই। তাই আমাদের চাষের জমি বন্দোবস্ত করে দিয়েছে সরকার। চাষাবাদের পর থেকে গরু-মহিষে ফসল নষ্ট করতে থাকে। বিষয়টি তমরদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফররুখ আহমেদকে জানিয়েছি। তিনি গরু ও মহিষ মালিক সবাইকে সতর্ক করলেও কেউ তা কানে তোলেননি। গত শনিবার রাতে দুই শতাধিক মহিষ দিয়ে তারা আমাদের জমির সব ধান নষ্ট করে দিয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে হুমকিও দিয়েছে তারা।

প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালীরা হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ কৃষকদের

কৃষক নবীর উদ্দিন (৪৬) বলেন, সরকার আমাকে কিছু জমি দিয়েছে। অনেক কষ্ট করে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পাশের উপজেলা মরপুরা থেকে ট্রাকটার ও বিজ এনে চাষাবাদ করি। কিন্ত আমাদের কিছু ক্ষমতাশালী লোক তাদের মহিষ দিয়ে আমার ও আরও কয়েকজন কৃষকের কষ্টের ফসল শেষ করে দিয়েছে। আমরা এখন খাবো কী? আর এই ঋণের টাকা পরিশোধ করবো কীভাবে?

অভিযুক্ত তমরদ্দি ইউপি সমদস্য রাশেদ উদ্দিন বলেন, রাতের বেলা মহিষগুলো জমিতে ঢুকে ধান খেয়ে ফেলেছে। আমরা বসে কৃষকদের ধানের ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবো।

এ বিষয়ে ইউএনও ইমরান হোসেন বলেন, আমার কাছে কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আমি তমরদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। মহিষ মালিকরা তাদের দোষ স্বীকার করেছেন। কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।