রাজশাহীতে হিমাগারে রাখা আলুর ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে পবা উপজেলার বায়া এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
হিমাগারে আলু রাখা ও বুকিং কাটা আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা জানান, বিগত বছরগুলোতে বস্তা করে আলু হিমাগারগুলোতে রাখা হতো। তখন বস্তা ধরে হিসাব রাখা হতো। প্রতি বস্তায় ৮০ থেকে ৯০ কেজি পর্যন্ত আলু থাকতো। গত বছর কমিয়ে ৫০ কেজি করে রাখা হয়। সে হিসাবে প্রতিকেজি আলু রাখতে তাদের খরচ পড়ে যেতো ৪ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এবার হিমাগার মালিকরা কেজি প্রতি ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আলু রাখা থেকে শুরু করে অন্যান্য খরচ মিলে এখানে ৭ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে যাচ্ছে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আহাদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠুন আহমেদ, আলুচাষি হাফিজুর রহমান, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
পবার বড়গাছি গ্রামের আলুচাষি রফিকুল ইসলাম ৫ হাজার বস্তা আলু রেখেছেন হিমাগারে। তার এলাকার আলুচাষিরা তার মাধ্যমে হিমাগারে রেখেছেন। তিনি প্রতিবস্তা আলু ২৩০ টাকা দরে রেখেছেন। গত বছর অক্টোবরে তিনি সমস্ত টাকা পরিশোধ করেছেন (পেইড বুকিং)। পরে চলতি বছর মার্চে আলু রেখেছেন। এখন আবার বাড়তি টাকা চাচ্ছে হিমাগার কর্তৃপক্ষ। বাড়তি টাকা না দিলে আলু দেবে না। গত কয়েকদিন ধরে তারা হিমাগার থেকে আলু বের করতে পারেননি।
মোহনপুর উপজেলার কৃষক হাফিজুর রহমান দেড় হাজার বস্তা আলু রেখেছেন হিমাগারে। তিনি বলেন, এবার আলু চাষে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে। অনেকে আলু চাষ করে পথে বসে গেছেন। আলুর দাম তো বাড়ছেই না। এখন হিমাগারে আলুর খরচ বাড়ালে তারা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। হিমাগারের সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য তারা রাস্তায় নেমেছেন।
জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, হিমাগারগুলোর হঠকারী সিদ্ধান্তে হাজার হাজার কৃষক, ব্যবসায়ী আজকে ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা বাড়তি ভাড়া দেবো না। আর হিমাগারগুলো বাড়তি ভাড়া আদায় ছাড়া আলু ছাড়ছে না। তারা আলু আটকে রেখে কৃষক, ব্যবসায়ীদের জিম্মি করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি।
রহমান সিডস স্টোরেজ হিমাগারের ব্যবস্থাপক আব্দুল হালিম বলেন, স্টোরেজে আলু রাখার ভাড়া কমানোর দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। আমরাও আলোচনায় বসতে চান। বিক্ষোভ করলে তো সমাধান হবে না।