কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘির উত্তরপাড় পূজামণ্ডপে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায় ৪৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন হয়েছে। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায় ৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও ধারণকারী ফয়েজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তিনটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডিআইজি আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে দেওয়া ভিডিও দেখলে বোঝা যায় স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আর বিশেষভাবে ঘটনাস্থল থেকে যে লোক ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছেন তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সে কোন দলের সমর্থক তাও যাচাই করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সায়েদুল আরেফিন, সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ ও কুমিল্লা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, গঠিত কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
এদিকে দুপুরে নানুয়ার দীঘির উত্তরপাড় পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।
তিনি বলেন, যুগের পর যুগ ধরে এই দেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ তাদের নিজস্ব ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করছেন। হঠাৎ করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে দেশবিরোধী চক্রান্ত বাস্তবায়নে একটি নির্দিষ্ট পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে সব মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করবেন। সবাই ধৈর্য্য ও সহনশীলতার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন।
এদিকে নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ও পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।