মিতু হত্যা: নারাজি আবেদনে বলা হয় বাবুল ষড়যন্ত্রের শিকার

স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় নিজের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নারাজি আবেদন দিয়েছেন বাবুল আক্তার। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে আবেদনটি করা হয়।

বাবুলের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের করা মামলায় ৫১ জনের বেশি সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কোনও সাক্ষী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে অভিযোগ করেননি; কোনও বক্তব্য দেননি। ঘটনার সাড়ে চার বছর পর ১৬৪ ধারায় দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তারা বলেছেন, বাবুল আক্তার একলাখ ২৫ হাজার টাকা লেনদেন করেছেন। এটার ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেন। মূলত বাবুল আক্তার মহলবিশেষের ষড়যন্ত্রের শিকার।

তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে বাবুল আক্তার স্বর্ণের চোরাকারবারী ও কালোবাজারীদের ধরেছেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করেছেন। আমরা মনে করি, একটি বিশেষ মহল এবং এই সিন্ডিকেট মিলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। খুনিরা গুলির পাশাপাশি ছুরিকাঘাতে মিতুকে হত্যা করে। ঘটনার সময় বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল আক্তার নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। এ ঘটনায় গত ১২ মে ৫৭৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। 

প্রতিবেদনে পিবিআই বলছে, মিতু হত্যা ছিল কন্ট্রাক্ট কিলিং। বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় এটি সংঘটিত হয়। মিতুকে হত্যার জন্য তিন লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এরপর একই দিন পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন।

গত ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় বাবুল আক্তারকে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১২ মে তাকে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেনের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পিবিআই। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালত বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। রিমান্ড শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে।