লাকীকে হত্যার পর বাসা আটকে পালিয়ে যান স্বামী

চট্টগ্রামে দেড় বছর আগে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত লাকী আক্তার পিংকীর স্বামী সোহাইল আহমদকে (৪০) বাগেরহাট থেকে গ্রেফতার করেছে নগরীর হালিশহর থানা পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, কলহের জেরে লাকীকে হত্যার পর লাশ বাসায় রেখে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায় সোহাইল। এ ঘটনায় সোহাইলের আরেক স্ত্রী নাহিদা আক্তারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত বছরের ২১ জুলাই হালিশহর থানার রহমানবাগ আবাসিক এলাকায় বাসা থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। মুখমণ্ডল বিকৃত থাকায় তখন তার পরিচয় জানা যায়নি। পরে বাসার কেয়ারটেকার নুর নবী মামলা করলে পুলিশ তদন্তে নামে। গত রবিবার রাতে ওই নারীর স্বামী সোহাইলকে বাগেরহাট থেকে গ্রেফতার করা হয়।

হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ জানতে পারে, এই হত্যাকাণ্ডে সোহাইল আহমেদ জড়িত। তিনি রেজাউল করিম পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নিলেও পুলিশ তার ছবি সংগ্রহ করে কেয়ারটেকার নুর নবীকে দেখায়। পরে তাকে শনাক্ত করেন নুর নবী। এরপর জানতে পারি, নিহত ওই নারীর নাম লাকী আক্তার পিংকী।

তিনি জানান, সোহাইল, নাহিদা ও লাকী চট্টগ্রামের পৃথক পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। সোহাইল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে লাকীকে বিয়ে করেন। এরপর তাকে হালিশহরের ওই বাসায় রাখেন। লাকী সোহাইলের চতুর্থ স্ত্রী। আর স্ত্রী নাহিদা তৃতীয়। তাকে ২০১৬ সালে বিয়ে করেন। নাহিদা পতেঙ্গা এলাকায় থাকতেন। অন্যরা থাকতেন বাগেরহাটে। সোহাইলকে গ্রেফতারের পর তার তথ্যের ভিত্তিতে নাহিদাকে পতেঙ্গা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গত বছরের ১৬ জুলাই সোহাইল ও লাকী হালিশহর থানার রহমানবাগ আবাসিক এলাকার বাসায় ছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যায় নাহিদাও তাদের বাসায় ছিলেন। লাকীর চালচলন নিয়ে সন্দেহ করা হতো। এ নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহাইল ১৬ জুলাই রাতে লাকীকে  মারধর করেন। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। 

এরপর সোহাইল লাকীর জামা-কাপড় খুলে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। লাশ বিছানার চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে রান্নাঘরে রেখে পালিয়ে যান। ঘটনাটি নাহিদা দেখেও চুপ থাকেন। এরপর সোহাইল ও নাহিদা সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় ২১ জুলাই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।