মিতু হত্যা মামলায় নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ পিবিআইয়ের

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন হয়েছে। আগের তদন্ত কর্মকর্তা সম্প্রতি বদলি হয়ে যাওয়ায় একই সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আরেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিমকে এবার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, আগের তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমাকে নগর পুলিশে বদলি করা হয়েছে। এ কারণে মামলাটি তদন্তে সংস্থার অপর পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি মামলাটির তদন্ত এগিয়ে নেবেন।

মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সন্তোষ কুমার চাকমা পিবিআই চট্টগ্রাম নগর শাখা থেকে বদলি হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) যোগ দেন। তিনি বর্তমানে সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে পরিদর্শক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

অপরদিকে, এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম জেলা শাখায় কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার তাকে একই সংস্থার নগর শাখায় বদলি করা হয়। সোমবার তিনি নগর শাখায় যোগ দেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। খুনিরা গুলি করার পাশাপাশি ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে। ঘটনার সময় বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন। 

হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল আক্তার নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। 

এ ঘটনায় গত ১২ মে ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। প্রতিবেদনে পিবিআই বলছে, মিতু হত্যা ছিল কন্ট্রাক্ট কিলিং। বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় এটি সংঘটিত হয়। মিতুকে হত্যার জন্য তিন লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।

এরপর একই দিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন। ওই মামলায় ওই দিন বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ১৪ অক্টোবর ওই প্রতিবেদনের ওপর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে নারাজি আবেদন করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। 

গত ২৭ অক্টোবর এ বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে ওই আদালত ৩ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিন আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। 

গত ১০ নভেম্বর অধিকতর তদন্ত শুরুর জন্য মিতু হত্যা মামলার নথিপত্র আদালতের হেফাজত থেকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। ১৪ নভেম্বর আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেছেন।