সুরভী লঞ্চে আগুন আতঙ্ক, নামিয়ে দেওয়া হলো যাত্রীদের 

ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচলকারী সুরভী-৯ লঞ্চে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, আগুন লাগেনি, ধোঁয়া দেখে যাত্রীদের মাঝে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। বড় ধরনের কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।

শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেঘনা নদীর চাঁদপুরের মোহনপুরে এ ঘটনা ঘটে। চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে রাত ৯টায় ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে সদরঘাট ত্যাগ করেছিল লঞ্চটি। মুন্সীগঞ্জ পার হয়ে মেঘনা নদীতে গেলে লঞ্চে ধোঁয়া দেখতে পান যাত্রীরা। পরে যাত্রীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লঞ্চটি চাঁদপুরের মোহনপুর লঞ্চঘাটে নোঙর করে। এ ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

লঞ্চ থেকে যাত্রীদের দ্রুত নামিয়ে নিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চাঁদপুর লঞ্চঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক রেজাউল করিম সুমন বলেন, সুরভি-৯ লঞ্চটি ঢাকা থেকে ছাড়ার পর সাইলেন্সার পাইপে ধোঁয়া উঠতে শুরু করে। এ সময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে হৈ-হুল্লোড় শুরু করেন। পরে লঞ্চের একটি ইঞ্জিন বন্ধ করে অপর ইঞ্জিনের সাহায্যে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোহনপুর ঘাটে নোঙর করা হয়। খবর পেয়ে সেখানে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস যায়। যাত্রীদের কোনও সমস্যা হয়নি।

তিনি বলেন, সুরভী-৯ লঞ্চটি চাঁদপুর ঘাটে ভিড়ে না। এটি সরাসরি ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচল করে। লঞ্চে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় এখানে ভিড়েছে। তবে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।

মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অহিদুজ্জামান বলেন, লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন লাগার খবর যাত্রীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর একটি ইঞ্জিন বন্ধ করে আরেকটি দিয়ে লঞ্চটি মোহনপুর ঘাট পর্যন্ত চালিয়ে আনা হয়।

তিনি বলেন, বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। তারা বলেছেন, বিআইডব্লিউটিএ’র লোকজন এলে লঞ্চের ইঞ্জিন ও যাবতীয় জিনিস চেক করবেন। যদি কোনও সমস্যা না থাকে তাহলে লঞ্চটি গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। সমস্যা থাকলে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।

সুরভী লঞ্চের যাত্রীরাচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক সাহিদুল ইসলাম বলেন, লঞ্চের দুটি ইঞ্জিনে দুটি সাইলেন্সার পাইপ থাকে। একটি সাইলেন্সার পাইপ হিট হয়ে হয়তো ধোঁয়া বের হয়েছিল। তবে আগুন ধরেনি। তারা পানি দিয়ে ধোঁয়া বন্ধ করে ফেলেছেন। এরপর একটি ইঞ্জিন দিয়ে মোহনপুর পর্যন্ত আসে। আসলে কয়েকদিন আগে লঞ্চ দুর্ঘটনার কারণে ধোঁয়া দেখেই যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। আমরা আগুনের কোনও চিহ্ন পাইনি। আর আগুন লাগলে একটা ইঞ্জিন দিয়ে এতদূর আসা যায় না। লঞ্চটির ইঞ্জিন ঠিক আছে। 

চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা কায়সারুল ইসলাম বলেন, সুরভি-৯ লঞ্চে ধোঁয়া দেখে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। যাত্রী এবং লঞ্চের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। লঞ্চটি চাঁদপুরের মোহনপুরে আছে। যাত্রীদের বিকল্প আরেকটি লঞ্চে বরিশালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যদি বলেন, ইঞ্জিন ঠিক আছে তাহলে লঞ্চটির গন্তব্যে যেতে বাধা নেই।