এমপি একরামুলকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করবে নোয়াখালী আ.লীগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব পদ-পদবি থেকে নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার এবং অব্যাহতির জন্য দলীয় হাইকমান্ডে সুপারিশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকালে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হওয়া সভায় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে এ সুপারিশ পাঠানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিগত ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় সভায় উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যের সর্বসম্মতিক্রমে এই সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামীকাল এ সংক্রান্ত চিঠি আওয়ামী লীগ দলীয় সভানেত্রী/সাধারণ সম্পাদক বরাবরে পাঠানো হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির এই সভায় জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম সেলিমের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- যুগ্ম আহ্বায়ক ও নোয়াখালী পৌর মেয়র সহিদ উল্লাহ খান সোহেলসহ জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্য।

সভায় সব বক্তা তাদের বক্তব্যে একরামুল করিম চৌধুরীর দল বিরোধিতার বিষয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন। এ সময় সবাই একরামুল করিম চৌধুরীকে দল থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের দাবি তোলেন। পরে উপস্থিত সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একরামুল করিম চৌধুরী এমপিকে আওয়ামী লীগ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার এবং অব্যাহতির জন্য দলীয় হাইকমান্ডে সুপারিশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শিহাব উদ্দিন শাহীন আরও বলেন, ‘সভায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের যেসব নেতা বিগত ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের তালিকা করে স্ব-স্ব সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।’

আহ্বায়ক খায়রুল আনম সেলিম বলেন, ‘একরামুল করিম চৌধুরী আমাদের দলের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হয়েও সদ্য সমাপ্ত পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্তিকর অবস্থায় ফেলেছেন। তাই আজকের সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি এবং চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, জেলার কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইলিয়াছ চৌধুরীকে সমর্থন দেন এমপি একরামুল। এরপর নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সহিদ উল্লাহ খান সোহেলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে লুৎফুল হায়দার লেলিনকে সমর্থন দেন। এ ছাড়া আসন্ন সুবর্ণচর উপজেলার চর জুবিলী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আনারস প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ খসরুর পক্ষে অবস্থান নেন। গত বুধবার অডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খসরুর আনারস প্রতীকের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। 

অপরদিকে, একই উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. তরিকুল ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুকের আনারস প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নেন।