সেই চেয়ারম্যান ও ছেলের বিরুদ্ধে জিডি করায় যুবককে মারধর

চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খানের বিরুদ্ধে দুই যুবককে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন দুই যুবক। জিডির পর দিন তাদের মধ্যে এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মৃত সিরাজুল ইসলাম খানের ছেলে নিরব খান বাদল ও মৃত জাহাঙ্গীর আলম খানের ছেলে ইসা খান চাঁদপুর মডেল থানায় পৃথক জিডি করেন। জিডিতে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খানকে বিবাদী করা হয়েছে।

নিরব খান জিডিতে উল্লেখ করেন, সেলিম খান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে আসছেন। এসব বিষয়ে এলাকার সহজ-সরল জনগণ তার ভয়ে মুখ খুলতে পারে না। সেলিম খান তার সাত শতাংশ ৬০ পয়েন্ট জায়গা জোরপূর্বক হুমকি-ধমকি দিয়ে রেজিস্ট্রি করে নেন। জায়গা বাবদ নিরবকে এক লাখ টাকা দিয়েছেন। বাকি টাকা চাইতে গেলে তার ছেলে শান্ত খান গুলি করে হত্যার পর লাশ গুমের হুমকি দেন। একদিন বাড়িতে খুঁজে না পেয়ে নিরবের ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক তার মা-বোনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। নিরব যদি থানা বা আদালতে যান, তাহলে শান্ত খান তার দুই ভাগিনা ও ভাগনেকে হত্যার হুমকি দেন এবং বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তাদের ভয়ে বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না নিরব। এ অবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জীবনের নিরাপত্তা চান।

তিনি বলেন, ‘জিডির পরদিন গত সোমবার বাড়ি ফেরার পথে সেলিম খানের বড় মেয়ের বাড়ির সামনে গেলে শান্ত খান ও তার সহযোগী শাকিল মোটরসাইকেলে এসে আমার গতিরোধ করেন। এক পর্যায়ে শান্ত খান আমাকে বেদম মারধর করে। দৌড়ে পালাতে চাইলে আরও মারতে থাকেন। পড়ে গেলে লাথি মারেন। শান্ত ও তার সহযোগী জাকির শেখ, সেলিম চেয়ারম্যানের ভাগিনা নাজমুলসহ কয়েকজন ছিলেন। আমার ডাক-চিৎকারে স্বজনরা এসে তাদের হাত থেকে বাঁচায়।’

আরও পড়ুন: সেই চেয়ারম্যানকে সতর্ক করলো জেলা প্রশাসন

চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালের রেজিস্টার দেখে রাতের ডিউটিরত চিকিৎসক সাইফুল্লাহ বলেন, লক্ষ্মীপুরের এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

আরেক ভুক্তভোগী ইসা খান জিডিতে উল্লেখ করেন, চেয়ারম্যান সেলিম খানের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছে। স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করতে চাইলে তা হয়নি। এরই মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত উচ্চ মূল্যের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের লিংক শেয়ার করায় সেলিম খান ২৫ ফেব্রুয়ারি ইসা খানের বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। গলা কেটে লাশ বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি যারা তার শেয়ার করা লিংকে লাইক ও কমেন্ট করেছেন, তাদেরকেও হুমকি দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে সেলিম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টা আইনগতভাবে বুঝবো। এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই।’

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুই জন জিডি করেন। এর মধ্যে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নিরব খানকে মারধরের খবর পাওয়া গেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।