‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় মিতুকে হত্যা’

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সঙ্গে অন্য নারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল; এই সম্পর্কের কথা মিতু জেনে যাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে যারা অংশ নিয়েছিল তারা বাবুল আক্তারের বিশ্বস্ত সোর্স। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে এসব তথ্য দিয়েছেন মিতুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। কোন নারীর সঙ্গে বাবুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে এর পক্ষে তথ্যপ্রমাণও দিয়েছেন মোশাররফ।

বুধবার (২ মার্চ) তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একাধিক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

পিবিআইয়ের তদম্ত কর্মকর্তা ও পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, মঙ্গলবার (১ মার্চ) মিতুর বাবার ঢাকার খিলগাঁও থানাধীন মেরাদিয়া ভূঁইয়া পাড়ার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে মিতু হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাবা মোশাররফ হোসেন, মা শাহেদা মোশাররফ, বোন ডা. শায়লা মোশাররফ নিনজার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বাবুলের প্রেমের বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। 

তিনি বলেন, মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বরাবরের মতো দাবি করেছেন, বাবুল আক্তারের প্রেমের কারণে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে পাঁচলাইশ থানায় করা মামলার এজাহারেও একই কথা উল্লেখ করেন তিনি।

পরিদর্শক আবু জাফর আরও বলেন, মিতুর দুই সন্তানকেও শিগগিরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুই সন্তানকে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হাজির করতে রবিবার আদালত আদেশ দিয়েছেন। 

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলের গাড়িতে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন মিতু। এ সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন। ঘটনার পরদিনই বাবুল আক্তার অজ্ঞাত তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে পুলিশ। এরপর সিএমপি কমিশনারের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় গোয়েন্দা পুলিশ। ২০২১ সালে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই।
 
গত বছরের ১১ মে মিতু হত্যা মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে পিবিআই। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসার পর পিবিআই কার্যালয়ে রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় হেফাজতে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে আট জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। এ মামলায় বাবুল আক্তারকে ১২ মে গ্রেফতার দেখানো হয়।