বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৬ গরুর মৃত্যু, ঋণে দিশেহারা খামারি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক খামারির ছয়টি গরু মারা গেছে। এ ঘটনায় আরও পাঁচটি গরু গুরুতর আহত হয়েছে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কালিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বাঙ্গরা বাজার থানার কালিপুর গ্রামের খামারি শফিক মিয়া ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই গরু পালন করেন। এ বছরেও ঋণ করে ১১টি গরু কেনেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার রাত ১১টার দিকে গরুগুলোকে খাবার দিয়ে ঘুমাতে যান শফিক। রাত আনুমানিক ১টার দিকে হঠাৎ খামার থেকে ছোটাছুটির শব্দ আসলে তিনি দৌড়ে যান। ততক্ষণে ছয়টি গরু মারা গেছে, গুরুতর আহত হয়েছে আরও পাঁচটি। গরুগুলোকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন শফিক।

তিনি বলেন, ‘আমার সব শেষ। কী নিয়া ভাত খাইয়া বাঁচুম! আমার তো আর কিচ্ছু নাই। গরুগুলা কীভাবে মরে পড়ে আছে। আমার ঋণ করা টাকা কে দিবো?’

শফিক আরও বলেন, ‘রাত ১১টায় গরুগুলোকে খাবার দিয়া ঘুমাইতে যাই। রাত ১টার দিকে গরুর ছোটাছুটির শব্দে ঘুম ভাঙে। গোয়াল ঘরের দরজায় হাত স্পর্শ করতেই শক খেয়ে মাটিতে পড়ে যাই। তাৎক্ষণিক উঠে মেইন সুইচ বন্ধ করে গোয়াল ঘরে যাই। দেখি ছয়টি গরু মরে পড়ে আছে। আর পাঁচটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে। আমার চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ আসলেও কিছু করার ছিল না। আগেই সব শেষ হয়ে গেছে।’

প্রতিবেশী মতিউর রহমান বলেন, ‘শফিক গরিব মানুষ। কয়টা গরু লালন পালন করতেন আর অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। দিন-রাত পরিশ্রম করে গরুর খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। এখন তার কান্না থামছে না। মাটিতে গড়িয়ে গড়িতে কাঁদছেন। আশা করি সরকার ও বিত্তবানরা তাকে সহযোগিতা করলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।’

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিষেক দাশ বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। শফিকের আর্থিক অবস্থা জানার পর আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে কিছু সহায়তা করা হবে। পরবর্তী সময়ে প্রতিবেদন জমা দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে আরও সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে। উপজেলা প্রশাসন তার পাশে আছে।’