ভেঙে পড়লো নির্মাণাধীন সেতু, একজন নিহত

রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কে একটি নির্মানাধীন সেতু ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনায় একজন শ্রমিক নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ত্রিতন চাকমা। এলজিইডি বলছে, ঠিকাদারের ভুলের কারণেই সেতুটি ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকের নাম রফিক (৪৫)। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশায়।

জানা গেছে, রাঙামাটি শহর থেকে আসামবস্তি হয়ে কাপ্তাই ১৯ কিলোমিটার সড়কের একাধিক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় নতুন করে সেতু নির্মাণ করছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এই কাজগুলো করছিলেন জসিমউদ্দিন নামে একজন ঠিকাদার। এই সড়কের মগবান ইউনিয়নের বরাদম এলাকার দেপ্যছড়িতে নির্মাণাধীন সেতুটির একাংশ ধসে পড়ে। ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ৩৬ মিটার ধসে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এটি এই সড়কের সবচেয়ে বড় সেতু, যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় চার কোটি পঁচাত্তর লাখ টাকা।

হাসপাতালে আহতদের কয়েকজনরাঙামাটি সদর উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী প্রণব রায় চৌধুরী বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যে স্থানে ঢালাই হচ্ছিল সেটার উপরই মিক্সার মেশিন রেখে কাজ করছিল, ফলে অতিরিক্ত ভাইব্রেশনে স্প্যানের জয়েন্টে হয়তো সমস্যা হয়েছে। ফলে কাজ শুরু করার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই মিক্সার মেশিনসহ গার্ডারের মধ্যবর্তী ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুত ৩৬ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। আমাদের তদারকির কাজে নিয়োজিত লোকজন ছিল, তবে তারা কেউ আহত হননি। এই আকস্মিক ঘটনায় আমরাও হতবিহ্বল।’

শ্রমিকরা বলেন, ‘কাজ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। এতে আমাদের একজন মারা যায় এবং অনেকে আহত হয়।’

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ত্রিতন চাকমা জানিয়েছেন, সেতু ধসে পড়ে আহত বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে এক জন মারা গেছেন এবং কমপক্ষে পনেরো জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা বেগম বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি, এটি অবহেলাজনিত কারণেই হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাঙামাটি এলজিইডি, নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি জানান, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলীকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন এ ঘটনা ঘটলো সেই বিষয়ে আগামী দুই দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকাদারের অবহেলার কারণেই এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমি প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি তবুও তদন্ত কমিটির কাজ শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’

এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদার জসিমউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। নানাভাবে যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। জেলা যুবলীগের এই নেতা এসএস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হলেও সেতু নির্মাণের এই কাজটি তিনি করছিলেন মেসার্স সেলিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের নামে।