ইফতার অনুষ্ঠানের ব্যানারে নাম না থাকায় আ. লীগ নেতাকে গাছে বেঁধে মারধর

ইফতার অনুষ্ঠানের ব্যানারে চেয়ারম্যানের নাম না থাকায় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গাছে বেঁধে মারধর করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গাউছিয়া কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

আহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম জিতেন কান্তি গুহ। তিনি হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। এছাড়া জিতেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা পূজা পরিষদের সাবেক সভাপতি। আহত জিতেন কান্তিকে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, গাছে বেঁধে জিতেন কান্তিকে মারধরের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ডেকেছে চট্টগ্রাম পূজা উদযাপন পরিষদ।

পূজা উদযাপন পরিষদ মহানগরের সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, জিতেনকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে আমরা কর্মসূচি ডেকেছি। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পূর্ব হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গাউছিয়া কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে জাতীয় সংসদের হুইপ ও পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী উপস্থিত থাকার কথা ছিল। ইফতার আয়োজন চলাকালে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে ব্যানার খুলে নিয়ে যায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। ইফতার মাহফিলের ব্যানারে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম জসিমের নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এতে ইফতার আয়োজন পণ্ড হয়ে যায়। এ নিয়ে কিছু লোক জিতেন কান্তিকে মারধর করে। পরে কমিউনিটি সেন্টারের সামনে হাত বেঁধে তাকে আবারও মারধর করা হয়। 

জিতেন কান্তির স্বজনদের অভিযোগ, পূর্ববিরোধকে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিএম জসিম লোকজন নিয়ে ইফতার মাহফিলস্থলে যান। জসিমের উপস্থিতিতে তার সমর্থকরা জিতেন কান্তিকে গাছে বেঁধে মারধর করে। 

এ বিষয়ে হাইদগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম জসিম বলেন, 'আমি বা আমার কোনও লোক জিতেন কান্তিকে মারধর করেনি। জিতেন কান্তির কাছে কিছু লোকজন টাকা পেতো এবং তিনি অনেকের জমি দখল করেছিলেন। তারা হাতের কাছে পেয়ে তাকে মারধর করেছেন। আমি সেখানে বিষয়টি দেখতে পেয়ে জিতেন কান্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।'

পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকেই চেয়ারম্যান জসিমের সঙ্গে জিতেন কান্তির বিরোধ ছিল। ইফতার মাহফিলের ব্যানারে নাম না দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএম জসিম ও তার লোকজন জিতেন কান্তির ওপর হামলা করেছে বলে শুনেছি। নাম না দেওয়ার কারণ হচ্ছে, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ নিয়েই মূলত বিরোধ। এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।