পর্যটকে মুখরিত অপরূপা বান্দরবান  

দীর্ঘদিন পর প্রাণ ফিরেছে পর্যটননগরী বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা বৃষ্টির মধ্যেও ছুটছেন পাহাড়কন্যা বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে। ইতোমধ্যে তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বান্দরবান। জেলার সবগুলো দর্শনীয় স্থানে ছুটে যাচ্ছেন তারা। শহরের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউজগুলোতে হয়েছে পর্যাপ্ত বুকিং।

সরেজমিন দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে অবকাশ যাপনে পর্যটকরা এখন ভিড় করছেন বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, তমা তুঙ্গী, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, দেবতাকুম, নাফাকুম, রেমাক্রীসহ সব পর্যটন কেন্দ্রে এখন পর্যটকের ভিড়। সকাল থেকে পর্যটকরা চাঁদের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে। কেউবা ছুটে যাচ্ছেন ঝরনার পানিতে গা ভেজাতে, কেউবা যাচ্ছেন পাহাড়ের চূড়ায় মেঘ ধরতে, আবার কেউবা যাচ্ছেন পাহাড়ি পল্লিগুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জীবনধারা উপভোগ করতে। আর মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্যগুলো স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখছেন তারা। কেউ চলন্ত মেঘের সঙ্গে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করছেন। কেউ ঝরনার সঙ্গে, কেউবা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের তৈরি পোশাকে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করছেন। নগর জীবনের ব্যস্ততা ভুলে তারা এখন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাচ্ছেন পর্যটকরাপর্যটকরা বলেন, ‘বান্দরবানে আমরা ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসেছি। আসার পর থেকেই বৃষ্টি। তারপরও আমরা বসে থাকিনি। বৃষ্টিতে ভিজেই আমরা পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখছি। বৃষ্টিতে অন্যরকম এক আমেজের ছোঁয়া পাচ্ছি আমরা। খুবই ভালো লাগছে আমাদের।’

এ বিষয়ে ঢাকা থেকে আসা পর্যটক লাবণি আক্তার বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে এসেছি। আশার পর থেকেই বৃষ্টি। এ বৃষ্টিতে ঘুরে বেড়াতে অনরকম এক অনুভূতি পাচ্ছি। খুবই ভালো লাগছে।’

আরেক পর্যটক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমি বান্দরবানে বেড়াতে এসেছি এবারই প্রথম। বান্দরবানের দৃশ্য এত সুন্দর, কখনও ভাবতে পারিনি! অসাধারণ বান্দরবান!’

ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়েপর্যটক ইমরান কায়েস বলেন, ‘আমি পরিবারের সঙ্গে মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরিসহ বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে ইতোমধ্যে ঘুরেছি। সবাই খুব সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করেছি। অনেক সুন্দর বান্দরবান।’

তবে টানা ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে নিরাপদে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে পারেন সেজন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ‘পর্যটকদের জন্য আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশের সব ছুটি বাতিল করেছি। পর্যটকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেজন্যর আমরা সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’

Bandarban eid porjoton news pic-5জেলায় পর্যটকদের সেবায় রয়েছে শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট, হাউস। এ ছাড়াও পর্যটক পরিবহনে রয়েছে চার শতাধিক চাঁদের গাড়ি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জেলার ২০ হাজার মানুষ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।