কক্সবাজারে প্রস্তুত ৫৭৬ আশ্রয়কেন্দ্র, পর্যটকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল উত্তাল রয়েছে। গত দু’দিন ধরে জেলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মধ্যে বয়ে যাচ্ছে দমকা হাওয়া। এ অবস্থায় কক্সবাজারের সব মাছ ধরার ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ অবস্থানে থাকার কথা বলেছে আবহাওয়া অফিস। 

এদিকে ঈদের ছুটির পরেও কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক অবস্থান করছে। সৈকতে আসা পর্যটকদের উত্তাল সমুদ্রে গোসল না করতে বিভিন্ন সতর্কবার্তা দিয়ে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যেও অনেক পর্যটক বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে সাগরে গোসল করতে নামছে।  পর্যটকদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা। 

এদিকে, কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছে। জেলা প্রশাসনের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলার ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। এছাড়া সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক টিম, রেডক্রিসেন্ট, স্কাউট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তৎপর রাখা হয়েছে। 

সভায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার, সুপেয় পানি মজুত রাখা, উপকূলীয় এলাকার মানুষদেরকে নিরাপদ স্থানে আনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পূর্বপ্রস্তুতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।  

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে কক্সবাজারে কোনও বিপদের শঙ্কা নেই। এরপরও জেলা প্রশাসন সবাইকে নিয়ে একটি সমন্বয় সভা করেছে। সভায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে সবমিলিয়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। পর্যটকরা যাতে সমুদ্রে নেমে গোসল না করেন সে বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। 

ট্যুরিস্ট কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম রেজা বলেন, কক্সবাজারে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত ঘোষণার পর ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপরতা বাড়িয়েছে। যাতে পর্যটকরা গভীর পানিতে নেমে গোসল কিংবা ওয়াটার বাইক না চালান। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। 

জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, জেলায় কোনও বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ বলা যাবে না। কক্সবাজার সদর, চকরিয়া ও পেকুয়াসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো মেরামত করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। বর্ষায় যে অংশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হবে সে সব অংশ মেরামতের জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।