‘যত ইচ্ছে ছবি তুলুন, বন্যার্তদের সাহায্য করুন’

যত ইচ্ছে ছবি তুলুন, বন্যার্তদের জন্য সাহায্য করুন। কুমিল্লার ধর্মসাগর পাড়ে গেলেই একদল যুবকের এমন অনুরোধের মুখে পড়েন সবাই। তাদের মানবিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে কেউ কেউ ছবি তুলছেন, কেউ না তুলেই সহযোগিতা করছেন, আবার কেউ সাড়া না দিয়েই চলে যাচ্ছেন। তবু একগাল হাসি নিয়ে দর্শনার্থীদের সামনে গিয়ে ধরছেন দানবাক্স। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার ছুটির দিনে কুমিল্লা ফটোগ্রাফি সোসাইটি নগর উদ্যান ও ধর্মসাগর পাড়ে এ আয়োজন করেছে। ছবি তোলার জন্য এক কোণে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন অস্থায়ী ছবির কর্নার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ৩৫ জন আলোকচিত্রী এতে অংশ নিয়েছেন। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে সংগঠনটি। এ আয়োজনের সব অর্থই বন্যার্তদের জন্য ব্যয় করা হবে। 

কুমিল্লা ফটোগ্রাফি সোসাইটির অফিস সেক্রেটারি মো. সুমিত আহম্মেদ বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের আর্তনাদ আমাদের নাড়া দিয়েছে। যদি একদিনের আয় আমরা বানভাসিদের জন্য উৎসর্গ করতে পারি, এটাই তৃপ্তির ব্যাপার।

কুমিল্লা ফটোগ্রাফি সোসাইটির সদস্য তাওসিফ বলেন, এ আয়োজনকে সুন্দর এবং প্রাণবন্ত করতে গত কয়েকদিন ধরেই ছুটছি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছি। মানুষের জন্য কিছু করতে পারাই তো মহান কাজ।

ছবি তুলতে আসা এক দম্পতি জানান, এমন আয়োজন অবশ্যই প্রশংসনীয়। আর তরুণদের ব্যতিক্রম একটি উদ্যোগ এটি। এভাবে সবাই নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে এলে বন্যার্তদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন সংগঠনের কর্মীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু রায়হান শেখ বলেন, ছবি তোলার পরই আমাদের মোবাইলে ছবি দিয়ে দিয়েছেন তারা। আমরাও সহযোগিতা করেছি। এটি ভিন্ন উদ্যোগ। মানুষের পাশে দাঁড়াতে শুধু মন থাকলেই হয়।

কুমিল্লা ফটোগ্রাফি সোসাইটির ফান্ড রাইজিং সেক্রেটারি সুজন দাস নিরব বলেন, বন্যার্ত মানুষকে সহযোগিতা করতে বিনামূল্যে ছবি তুলছি। কেউ ছবি তুলে সহযোগিতা করছেন, কেউ না তুলেও সহায়তা দিচ্ছেন। অসহায় মানুষের জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারছি, এটাই তৃপ্তির। 

কুমিল্লা ফটোগ্রাফি সোসাইটির সভাপতি ইমন রেজা বলেন, গতবারও আমরা এমন আয়োজনের মাধ্যমে জামালপুরের বন্যার্ত মানুষের জন্য বড় একটা অর্থ সংগ্রহ করে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গেছি। এবার ব্যতিক্রম ধারার এই আয়োজনে মানুষের বেশ সাড়া পেয়েছি। একদিনে আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি প্রায় অর্ধলাখ টাকা। আশা করছি, বানভাসিদের উপকার করতে পারবো।