কাউন্সিলরের পুত্রবধূকে হত্যা নাকি আত্মহত্যা?

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আমিনের পুত্রবধূ রেহনুমা ফেরদৌস (২৫) আত্মহত্যা করেছেন নাকি হত্যাকাণ্ডের শিকার তার কারণ খুঁজছে পুলিশ। ঘটনার পর রেহনুমার স্বামী নওশাদ আমিনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও কারণ খুঁজে পায়নি পুলিশ।

এদিকে, শনিবার (২ জুলাই) রাত ৯টায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

রেহনুমার চাচা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সরফরাজ নেওয়াজ রবিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৮ সালে রেহনুমার সঙ্গে কাউন্সিলর নুরুল আমিনের ছেলে নওশাদ আমিনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের আড়াই বছরের এক মেয়েসন্তান রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেহনুমাকে নির্যাতন করতো। তাদের নির্যাতনে রেহনুমার মৃত্যু হয়েছে। এটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এটিকে তারা আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে রেহনুমার বাবা তারেক ইমতিয়াজকে ফোন করে কাউন্সিলর নুরুল আমিন জানান, রেহনুমা আত্মহত্যা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায় রুমে পড়ে আছে রেহনুমার নিথর দেহ। একইভাবে পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ বিছানায় দেখতে পায়।’

রবিন আরও বলেন, কিছুদিন আগে রেহনুমা তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল, ‘কথার আঘাত ছুরির আঘাতের চেয়েও ধারালো।’ কতখানি কষ্ট পেলে এ ধরনের স্ট্যাটাস একজন মানুষ দিতে পারে। রেহনুমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রভাবশালী। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। এটি হত্যাকাণ্ড, আমরা ন্যায়বিচার চাই। দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

রেহনুমার বাবা তারেক ইমতিয়াজ বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিয়মিত নির্যাতন করতো। দেড় মাস আগেও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বাসায় দুই দফা সালিশ বৈঠক হয়েছিল। এরপরও তারা থামেনি। তাদের নির্মম নির্যাতনে মেয়ে মারা গেছে। এখন আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ 

এ বিষয়ে জানতে রেহনুমার শ্বশুর ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আমিনকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। অপরদিকে, রেহনুমার স্বামী নওশাদ আমিন পুলিশ হেফাজতে থাকায় কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খবর পেয়ে শনিবার সকাল ১০টায় কাউন্সিলর নুরুল আমিনের পুত্রবধূ রেহনুমা ফেরদৌসের লাশ বাসার একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের স্বামী থানায় এসেছিল। তার সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনায় কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আটক করা হবে।’