ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ, বাসে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া

ঈদুল আজহায় ঘরমুখো মানুষকে বাড়ি ফিরতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার যানবাহন সংকটে যাত্রীদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাউন্টারেই কাটাতে হয়েছে।

অধিকাংশ বাসের টিকিট না থাকায় যাত্রীদেরকে এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে যেতে দেখা গেছে। আবার টিকিট পেলেও তা দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি টাকায় নিতে হয়েছে। অনেককেই

বাস-ট্রেনের টিকিট না পেয়ে ট্রাক, মাইক্রো, প্রাইভেটকার দলবেঁধে ভাড়া করে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।  একই অবস্থা ট্রেনেও। ট্রেনের ভেতর দাঁড়িয়ে এবং ছাদে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, ৩০ টাকার ভাড়া দেড়শ, ৫০ টাকার ভাড়া ২০০ এবং ৪০০-র ভাড়া এক হাজার ৪ শ পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বললেন, অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি কারখানায় কর্মরত মো. হুমায়ুন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এবার চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল রুটে দুই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরা যাচ্ছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে বরিশাল রুটে সরকার নির্ধারিত ভাড়া এক হাজার ৩২৭ টাকা, অন্য রুট চট্টগ্রাম থেকে হরিনাঘাট দিয়ে এ রুটে ভাড়া আরও কম। তবে দুই রুটেই যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে  এক হাজার ৮ শ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।

মো. ফরহাদ হোসেন নামে অপর যাত্রী জানান, চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত ভাড়া এক শ টাকা। শুক্রবার অধিকাংশ যানবাহনে নেওয়া হয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

চট্টগ্রাম অক্সিজেন স্টেশন থেকে ফটিকছড়ি পর্যন্ত বাস ভাড়া ৫০ টাকা। নেওয়া হয়েছিল ১০০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়ার ক্ষেত্রেও একই নৈরাজ্য দেখা গেছে। যাত্রীরা জানিয়েছেন, অক্সিজেন মোড় থেকে ফটিকছড়ি পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশায় ভাড়া ১০০ টাকা। শুক্রবার নেওয়া হয়েছে ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের অভিযোগ চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কেও।

মো. সাকিব উদ্দিন নামে প্রকৌশলী জানিয়েছেন, রাস্তার মাথা থেকে পাহাড়তলী পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ে জনপ্রতি ৩০ টাকা ভাড়া। শুক্রবার নেওয়া হয় ১৫০ টাকা করে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে এত বেশি ভাড়া গুণতে হয়েছে। এ রুটে যাত্রী বাড়লেই ভাড়া বাড়ে।

মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি জানান, চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত বাসা ভাড়া ১০০ টাকা। শুক্রবার নেওয়া হয়  ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। তার ওপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল বাসের জন্য।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার বলেন, ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কপিল উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের যানজট খুবই কম। তবে ফৌজদারহাট এলাকায় কিছুটা যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বলা আছে, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া যেন নেওয়া না হয়। এরপরও যদি নেওয়া হয় সেটা বাস শ্রমিকরা নিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে বাসভর্তি যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে, ফেরার সময় সেই বাস আবার খালি আসছে।’