সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে দলীয় সভায় গেলেন চেয়ারম্যান, বললেন ‘ভাড়া দিয়েছি’

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইসলামী আন্দোলনের উপদেষ্টা মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কাজে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তবে চেয়ারম্যান দাবি করছেন, উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেছেন। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দাবি করেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

জেলা প্রশাসন বলছে, অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের ব্যবহারের জন্য। সেটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। চেয়ারম্যান সরকারি নীতিমালা অমান্য করে রাজনৈতিক কাজে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেছেন। এর আগেও রাজনৈতিক কাজে অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করেছেন তিনি। এতে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) রাতে জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসের হাটের চমকা বাজার এলাকায় রাজনৈতিক সভায় নেওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সটি। সেখানে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন মাস্টারের জামাতা মো. মুরাদের বাড়িতে ইসলামী আন্দোলনের সভা ছিল। সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ওই বাড়িতে ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি।

জানা গেছে, কমলনগর উপজেলার চরকাদিরাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রান্তিক রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি চার মাস আগে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এটি চরকাদিরা ইউনিয়নেই থাকতো।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমি ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুমতি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেছি। ‘‘স্বপ্নযাত্রা’’ অ্যাম্বুলেন্সটি কেউ ভাড়ায় নেন না। এমনিতে পড়ে থাকে। কিন্তু চালককে বেতন দিতে হয়। এ জন্য আমি ভাড়ায় ব্যবহার করেছি।’

কমলনগরের ইউএনও মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন আকন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রোগীদের সেবা দেওয়া ছাড়া অন্য কাজে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের নিয়ম নেই। রাজনৈতিক কাজে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ইউনিয়নে উচ্চশব্দে গান-বাজনা করলে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানার ঘোষণা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ। ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। খালেদ সাইফুল্লাহ বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা।