চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে নিয়ে যা বললেন ১০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা ও শহর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ ১০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের চট্টগ্রাম শহর গ্রুপ কমান্ডার ও হাইকমান্ড সদস্য ডা. মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত এই বিবৃতি মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। 

এতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক মোনাজাতকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের চেষ্টা চলছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। তরুণ, চৌকস সরকারি কর্মকর্তা মমিনুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করেন। তার সঙ্গে সাক্ষাতে মুক্তিযোদ্ধারা তা অনুভব করেন। চট্টগ্রামের জনগণের জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। প্রতিদিন অসংখ্য লোকের অভিযোগ শোনেন এবং সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি সরকারি ভূমি উদ্ধারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল এই জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।

বিবৃতি দেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- চট্টগ্রাম শহর ও হাইকমান্ড সদস্য ডা. মাহফুজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল হারুন, শহর যুদ্ধকালীন কমান্ডার শাহজাহান খান, যুদ্ধকালীন প্রশিক্ষক ফাহিম উদ্দিন আহমদ, শহর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলম, মীরসরাই থানা কমান্ডার অহিদুল হক, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের প্রথম কণ্ঠস্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র বণিক, বাশখালী-কুতুবদিয়া বিএলএফ কমান্ডার ডা. আবু ইউসুফ চৌধুরী, বোয়ালখালী থানা কমান্ডার রাজেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী (বিএলএফ), বোয়ালখালী থানা কমান্ডার মোহাম্মদ সোলায়মান (এফএফ), বোয়ালখালী এফ এফ কোম্পানি কমান্ডার আবুল বশর, বোয়ালখালী এফএফ কমান্ডার আ হ ম নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ১১নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার ডা. শাহ আলম ভূঁইয়া, যুদ্ধকালীন রাউজানের সিইনসি ফেরদৌস হাফিজ খান রুমু, শহর কমান্ডার এসএসএম মাহবুব উল আলম ও যুদ্ধকালীন শহর কমান্ডার মো. হোসেন, শহর কমান্ডার মো. জাহেদ, শহর কমান্ডার নুরুদ্দিন চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়ার কমান্ডার সালেহ আহমদ, হাটাজারীর কমান্ডার আহমদ ছফা, কমান্ডার মোখতারুল আলম, চন্দনাইশের কমান্ডার আবদুল মজিদ, ডেপুটি কমান্ডার জাফর আলী হীরু।

আরও বিবৃতি দিয়েছেন, চট্টগ্রাম শহর যোদ্ধা মো. হারিস, রেজাউল করিম বাচ্চু, আবুল কাসেম বিএসসি, আবুল হোসেন, আবদুল আহাদ চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম রাজু, দেওয়ান মাকুসদ আহমদ, অরুন দাশ সাথী, মনসুরুর রহমান, শফি খান, দোস্ত মোহাম্মদ, ফজলুল হক ভূঁইয়া, অমল মিত্র, মুকুল দাস, রফিক চৌধুরী, আবুল কাসেম, তৌহিদুল করিম কাজল, অধ্যাপক ওয়াহিদুল আলম, মুন্সি মিয়া, আহমদ উল্লাহ, আনোয়ার খান, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, মীরসরাইয়ের আবদুল মান্নান, বেলায়েত হোসেন চৌধুরী, রেজাউল করিম চৌধুরী কুসুম, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সীতাকুণ্ডের মো. মনিরুল ইসলাম, মানিক লাল বড়ুয়া, সরওয়ার কামাল লাতু ও নৌকমান্ডো মো. নুরুল গনি, ফটিকছড়ির নৌকমান্ডো বদিউল আলম শাহ, জনার্দন হরি দে, পটিয়ার আজম সাদেক, কাজী আবু তৈয়ব, চৌধুরী মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক পঙ্কজ কুমার দস্তিদার, জয়নাল আবেদীন, আনোয়ারার রাজা মিয়া, আবুল কাশেম, হাটহাজারীর জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, সাতকানিয়ার আবদুল হাকিম চৌধুরী, লোহাগাড়ার নুরুল ইসলাম, আসকার আহমেদ সিকদার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল গত ১৫ সেপ্টেম্বর। ওই দিন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান প্রার্থীর বিজয় কামনা করে দলীয় নেতাদের সঙ্গে মোনাজাতে অংশ নেন।

একপর্যায়ে প্রার্থীকে পাশে বসিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্যও রাখেন ডিসি। সেই বক্তব্যে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার যেন আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়, সে জন্য বিএনপি-জামায়াতেরও দোয়া করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। এই ঘটনায় রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয় নির্বাচন কমিশন।