মীরসরাইয়ের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎহীন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে লাইনের ওপর গাছ পড়ায় মীরসরাইয়ের অধিকাংশ এলাকা ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষজন। 

সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। ফলে অন্ধকারে রয়েছেন উপজেলার মানুষজন। 

এদিকে, সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়ায় উপজেলার বামনসুন্দর এলাকায় মঘাদিয়া ঘাটে জেলেদের ২০টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি নৌকা ভেঙে গেছে।

নৌকার মালিক আলতাফ হোসেন, শওকত হোসেন, সুরেশ চন্দ্র দাস, নিমাই চন্দ্র দাস, ইসমাইল হোসেন, ভোটন চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, তাদের ২০ জনের ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তাদের।

পূর্ব দূর্গাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলেন, ‘সোমবার রাত ১০টার দিকে বিদ্যুৎ যাওয়ার পর মঙ্গলবার রাত ১১টা পর্যন্ত আসেনি। টানা বিদ্যুৎ না থাকায় দোকান ও বাড়ির ফ্রিজে থাকা সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ কখন আসবে তার নিশ্চয়তা নেই।’

এর আগে রাত থেকে বৃষ্টিপাত ও বাতাসে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান মাটিয়ে শুয়ে পড়েছে। এছাড়া সবজি ক্ষেতে পানি জমেছে। 

জানা গেছে, উপজেলায় এবার ১৯ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় দেরিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়। উপজেলায় এবার এক হাজার ২০০ একর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে। বৃষ্টিতে পানি জমে সবজির ক্ষতি হতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আমন ধান ও শীতকালীন সবজির কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। কিছু পাকা আমন ধান দ্রুত কেটে ফেলতে কৃষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মীরসরাই জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাইফুল আহমেদ বলেন, ‌‘বিদ্যুতের লাইনের ওপর গাছ ও বাঁশ পড়ে সাতটি খুঁটি ভেঙে গেছে। অসংখ্য জায়গায় তার ছিঁড়ে গেছে। ক্রস আর্ম পুড়েছে দুটি। খুঁটি হেলে পড়েছে ছয়টি। উপজেলার কচুয়া, ঠাকুরদিঘী, উত্তর তালবাড়ীয়া, হাদি ফকিরহাট, নাজিরপাড়া, তারাকাটিয়া, এসাক ড্রাইভারহাট, বামনসুন্দর, বিশ্বদরবার, মিঠানালা ও খইয়াছড়াসহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়েছে। গাছ কেটে অপসারণের জন্য কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।’

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মৎস্য ঘেরের তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও মঘাদিয়া ঘাটে জেলেদের মাছ ধরার ২০টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি নৌকা ভেঙে গেছে।’