চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় রেকর্ড গড়তে চায় আ.লীগ

আগামী ৪ ‌ডি‌সেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের জনসভা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। এদিকে জনসভা সফল করতে কাজ শুরু করেছে জেলা ও নগর আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নগরজুড়ে চলছে সাজসজ্জার কাজও।

নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের জনসভায় তারা জনসমাগমের রেকর্ড গড়তে চান। জনসভায় অন্তত ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আশপাশের মানুষ যাতে শুনতে পারে এ জন্য লাগানো হবে ৩০০ মাইক। পলোগ্রাউন্ডে সাত ফুট উঁচু মঞ্চ তৈরি করা হবে। এর দৈর্ঘ্য হবে ১২০ ফুট ও প্রস্থ হবে ১৪০ ফুট। মঞ্চে একসঙ্গে ২০০ অতিথি বসতে পারবেন।

বাংলা‌দেশ আওয়ামী লী‌গের সভাপ‌তিমণ্ডলীর সদস্য ও সা‌বেক মন্ত্রী ই‌ঞ্জি‌নিয়ার মোশাররফ হো‌সেন বলেন, ‘এ জনসভা থে‌কে দলীয় প্রধান শেখ‌ হা‌সিনা আগামী নির্বাচনে বিজয়ের জন্য নেতাকর্মী‌দের নি‌র্দেশনা দেবেন। দলীয় নেতাকর্মী‌দের মাধ্যমে হয়‌তো তি‌নি জনগ‌ণের কা‌ছে আগামীর চট্টগ্রাম ও বাংলা‌দেশ সম্প‌র্কে বার্তা পাঠা‌তে পা‌রেন।‌ রাষ্ট্রীয়‌ দা‌য়িত্ব পাল‌নে বেশি সময়‌ দি‌তে ও ক‌রোনা মহামারিসহ নানা কার‌ণে তি‌নি দীর্ঘ‌দিন খোলা মা‌ঠে দলীয় জনসভায় যোগ দেন‌নি। চট্টগ্রা‌মের পলোগ্রাউন্ড মা‌ঠে‌ তি‌নি দীর্ঘ ১০ বছর পর সমা‌বে‌শে ভাষণ দেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রিয় নেত্রীর আগম‌নে খুবই খুশি। আমরা সে‌দিন স্মরণকা‌লের সর্ববৃহৎ জনসমাগম ঘ‌টি‌য়ে আমা‌দের নেত্রী‌কে দেশবাসী‌কে দে‌খি‌য়ে দি‌তে চাই চট্টগ্রা‌মের আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, আওয়ামী লীগ মানু‌ষের পা‌শে ছিল, আ‌ছে এবং থাক‌বে। আর চট্টগ্রা‌মের মানুষ আওয়ামী লী‌গের সঙ্গে র‌য়ে‌ছে ও থাক‌বে। চট্টগ্রাম থে‌কেই আগামী নির্বাচ‌নে নৌকার বিজয় মি‌ছি‌লের আগাম পদধ্ব‌নি আমরা স্বাধীনতাবি‌রোধী বিএন‌পি-জামায়াত জোট‌কে শোনা‌তে পারবো ব‌লে বিশ্বাস করি।’

আয়োজন বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে ঘিরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরীকে পরিপাটি করে সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় প্রবেশের পথ সুগম ও মসৃণ করে তোলা হয়েছে। জনসভায় আগত জনসাধারণের কোনও সমস্যা যাতে না হয় সে জন্য সুপেয় পানি, ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী টয়লেট স্থাপন করা হবে।

মেয়র আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, তাতে স্বাগত জানিয়ে জনসভাকে সফল করার নৈতিক দায়িত্ব নিতে চট্টগ্রামবাসী প্রস্তুত। জনসভাকে জনসমুদ্রে রূপান্তর করে নেত্রীর ঘোষিত কর্মসূচি পালন করার জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

এদিকে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি  ও রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা হচ্ছে। সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। এ সমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উজ্জীবিত। আওয়ামী লীগকে ভাড়া করে লোক আনতে হবে না। মানুষ নিজ থেকেই আসবে।’

এর আগে, গত ১২ অক্টোবর পলোগ্রাউন্ড মাঠে সমাবেশ করেছিল বিএনপি। ওই সমাবেশে বিপুল সংখ্যক জনসমাগম হয়। তবে বিএনপির জনসভার চেয়ে বেশি লোকসমাগম ঘটাতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কাজ শুরু করেছেন। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রস্তুতি সভা। পাশাপাশি উপজেলাগুলো থেকেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর এই জনসভায় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি সভা করা হচ্ছে। ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠে সর্বশেষ জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই মাঠে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।