কাপ্তাই হ্রদে পানি স্বল্পতায় কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন

কোনও জ্বালানি ছাড়াই শুধুমাত্র কাপ্তাই হ্রদের পানি ব্যবহার করে দেশের সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে। শীত মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমে যাওয়ায় দেশের একমাত্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। পাশাপাশি হ্রদে পানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে শুধুমাত্র ২ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে। কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে এবং যেকোনো সময়ে এটি চালু করা হবে। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি স্বল্পতায় প্রথম ইউনিটসহ ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে।’

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, ষাটের দশকে কাপ্তাইয়ে স্থাপন করা হয় কাপ্তাই বাঁধ। যার উদ্দেশ্য ছিল পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। শুরুতেই দুটি ইউনিট নিয়ে শুরু হওয়া এই কেন্দ্রে বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে প্রতিদিন ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। জ্বালানি ছাড়াই শুধুমাত্র কাপ্তাই হ্রদের পানি ব্যবহার করে দেশের সবচেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কেন্দ্রটি। বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ে ৩৫ পয়সা। প্রতি ইউনিট ৩৫ পয়সা খরচে পাঁচটি ইউনিটে প্রতিদিন ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে এই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ ৯০.০৯ ফুট মীন সী লেভেল (এমএসএল)। যেখানে হ্রদে রুল কার্ভ অনুযায়ী বর্তমানে পানি থাকার কথা ১০৬.৪ (এমএসএল) এবং কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ (এসএসএল)। প্রতি বছর শীত মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়।

প্রসঙ্গত, পানির ওপর নির্ভরশীল কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট দিয়ে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।