রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুর মৃত্যু

রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়নে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত শিশুটির নাম গভীর চাকমা (৩)। সে দুমদুম্যা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের অনিল চাকমার ছেলে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা চিকিৎসক অনন্যা চাকমা। এর আগে রবিবার (২২ জানুয়ারি) রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়।

অনন্যা চাকমা বলেন, ‘ম্যালেরিয়ায় এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। শিশুটি দীর্ঘদিন ভারতের বগাখালীতে থাকতো। সেখান থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আসার পর পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়। শনিবার চিকিৎসা শুরুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুটি মারা যায়।’

জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় গত নভেম্বর মাসে ৮৫ ও ডিসেম্বর মাসে ৮৫ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী দুমদুম্যা ইউনিয়নে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী হওয়ায় জুরাছড়ি উপজেলার মানুষজন ভারতের বগাখালীতে আসা-যাওয়া করেন। সেখানে গিয়ে কয়েকদিন আগে শিশুটি জ্বরে আক্রান্ত হয়। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সময়মতো চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় না। ফলে কেউ অসুস্থ হলে সময়তো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা যায় না।

বিলাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, গত নভেম্বরে ৩২ ও ডিসেম্বরে ২০ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এর মধ্যে উপজেলার দুর্গম সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন ফারুয়া ও বড়থলিতে রোগীর সংখ্যা বেশি। দুর্গম ও সীমান্তবর্তী হওয়ায় সরকারি চিকিৎসা পাওয়া কষ্টকর। পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত দুই মাসে উপজেলার লোকজন জ্বর ও কাঁশির চিকিৎসা নিতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে চিকিৎসা নিতে এলে পরীক্ষায় ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত বর্ষা মৌসুমে জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, বরকল ও বিলাইছড়িতে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বর্ষা মৌসুমের আগেই ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

ব্র্যাক বিনামূল্যে যেসব মশারি দিয়েছিল তার কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে বলে মনে করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা। তিনি বলেন, ‘একটি মশারির কার্যকারিতা থাকে তিন বছর। এ বছর নতুন করে মশারি দেওয়া হলে আগামী বছর রোগীর সংখ্যা কমবে।’