ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচন

স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আত্মগোপনে থাকতে পারেন: রিটার্নিং কর্মকর্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদের (মোটর গাড়ি) প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুছা মিয়া গ্রেফতারের পর এবার নিখোঁজ রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ।

তবে আবু আসিফকে আইশৃঙ্খলা বািহনীর কেউ আটক করেনি। তিনি হয়তো আত্মগোপনে রয়েছেন বলে দাবি করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুননেচ্ছা মেহেরিন অভিযোগ করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তার বাড়ি তল্লাশি করেছেন সাদাপোশাকের লোকজন। গত শুক্রবার থেকে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তার স্বামী আবু আসিফ আহমেদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি কোথায় আছেন, তা-ও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তিনি।

ভীত কণ্ঠে তিনি জানান, সার্বক্ষণিক বাড়ির সামনে সাদাপোশাকের লোকজন ঘোরাফেরা করছে। তিনি চরম আতঙ্কে আছেন বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, আবু আসিফ শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে দাঁড় করিয়েছেন। তারা এখন বলছেন সে যেখানেই থাকুক না কেন, তারা প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাবেন। এ ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কমিশনারের কাছে সহযোগীতা কামনা করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম জানান, আবু আসিফ আহমেদকে আইশৃঙ্খলা বািহনীর কেউ আটক করেনি। তিনি হয়তো আত্মগোপনে রয়েছেন। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি উপনির্বাচনে বিএনপির সাবেক নেতা এবং এই আসন থেকে নির্বাচিত পাঁচবারের সাবেক সংসদ ও বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার (কলারছড়ি প্রতীক) প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

এর আগে গত বুধবার আবু আসিফের নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা মুছা মিয়াকে (৮০) হামলা ও সংঘর্ষ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আবু আসিফের নির্বাচন সমন্বয়কারী ও তার শ্যালক সাফায়েত সুমন ইতিমধ্যেই আত্মগোপনে আছেন।

আবু আসিফের বাড়ির দারোয়ান মো. ইউসুফ বলেন, শুক্রবার রাতে কয়েকজন এসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে পুরো বাড়ি তল্লাশি করে। পরের দিন আবার আসে। বাসার সামনে সাদাপোশাকধারী লোকজন অবস্থান করছেন।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ কি না, সে বিষয়ে পরিবার থেকে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বাড়ির সামনে সাদাপোশাকধারী কারও অবস্থানের বিষয়টিও তিনি জানেন না বলেও জানান।

উল্লেখ্য, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন প্রার্থী। এরা হলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এই আসনের ৫ বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া (কলারছড়ি প্রতীক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের ২ বারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (আপেল প্রতীক), জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল (গোলাপ ফুল), ও স্বতন্ত্র  প্রার্থী ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফ আহমেদ (মোটর গাড়ি প্রতীক)।

তবে প্রতীক বরাদ্দের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন।