পানছড়ির রাবার ড্যাম পাল্টে দিচ্ছে হাজারও কৃষকের ভাগ্য

রাবার ড্যামসরকারের একটি সিদ্ধান্তে বদলে গেছে শত শত কৃষকের ভাগ্য। শুষ্ক মৌসুমে যেসব এলাকা পানির অভাবে অনাবাদী ছিল সেগুলোতে এখন বিভিন্ন শস্য ও সবজির ফলন বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। প্রায় আড়াই হাজার একর জমিতে তিন ইউনিয়নের শত শত কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো এই সিদ্ধান্ত হচ্ছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুরে চেঙী নদীর ওপর স্থাপিত রাবার ড্যাম।
পানছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালেও শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদী থাকতো পানছড়ি উপজেলার উল্টাছড়ি, লতিবান ও পানছড়ি ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার একর জমি। ফলে ধান, গম, ডাল ও বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি উৎপাদনে পিছিয়ে ছিল এসব এলাকার কৃষকরা। চাহিদা পূরণে তাকিয়ে থাকতে হতো অন্যান্য উপজেলা ও জেলাগুলোর দিকে। বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার ২০১৩ সালে পানছড়ির অদূরে শান্তিপুর এলাকায় প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমবারের মতো নির্মাণ করে রাবার ড্যাম। এর ফলে একদিকে মূল সড়কের সঙ্গে উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের যোগাযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে পানি আটকিয়ে শীতকালীন শস্য ও শাক সবজি উৎপাদনেও কৃষকরা পাচ্ছেন সাফল্য।
রাবার ড্যামপানছড়ি উপজেলার শান্তিপুর এলাকার কৃষক স্নেহ কুমার চাকমা বলেন, রাবার ড্যাম নির্মাণের ফলে পানছড়ির তিন ইউনিয়নের শত শত কৃষক পানির সুবিধা পাচ্ছে। ধান, গমসহ বিভিন্ন ফসল ফলাতে পেরে কৃষকরা খুব খুশি।
একই এলাকার কৃষক সমীর চাকমা বলেন, আগে যেসব জমিগুলো চাষ করা কঠিন হতো এখন পানির কারণে সেসব জমি চাষের আওতায় এসেছে। খুব সহজে জমি ও অন্যান্য বাগানগুলোতে সেচ দেওয়া যায়।
বিপুল চাকমা বলেন, রাবার ড্যাম নির্মাণের ফলে যেমন ধান, গম ও শাকসবজি চাষ করতে পারছি, তেমনি মাছ চাষও হচ্ছে। তীরবর্তী অনেক কৃষক হাঁসও পালন করছে। কৃষকরা আর্থিকভাবে খুবই উপকৃত হয়েছে।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, রাবার ড্যামের ফলে প্রায় আড়াই হাজার একর পতিত জমি চাষের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার একর জমিতে বোরো, পাঁচশ’ একর জমিতে সবজি এবং এক হাজার একর জমিতে বিভিন্ন বাগান হয়েছে। শীতকালে বিভিন্ন সবজি চাষ করে তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি লাখ লাখ টাকা আয় করছে।

/বিটি/টিএন/