আফ্রিকার সড়কে নিহত ৫ জনের ঘরে ঘরে শোকের মাতম

দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ জনের বাড়িই ফেনীতে। নিহত এই পাঁচ প্রবাসীর বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। পরিবারগুলো জানিয়েছে, ভাগ্য বদলের আশায় আফ্রিকায় গিয়ে এখন তাদের দেশে ফিরতে হচ্ছে লাশ হয়ে। লাশ দ্রুত ফেরত আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা

নিহত পাঁচ জন হলেন- ফেনী সদর উপজেলার বিরলী গ্রামের ইসমাইল হোসেন, দাগনভূঞা উপজেলার মোমারিজপুর গ্রামের দীন মোহাম্মদ রাজু ও দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল নোপেল, সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চরমজলিশপুর গ্রামের আবুল হোসেন ও তার ছেলে নাদিম হোসেন। সবার বাড়িতে গিয়ে দেখা মিললো স্বজনের আহাজারির দৃশ্যের।

ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলী গ্রামের ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে স্বজনেরা আপনজন হারানোর শোকে কাতর। তার বাবা শরীয়ত উল্লাহ বলেন, আমার ছেলে অবিবাহিত। আগামী দুই মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল। তাকে বিয়ে করানোর প্রস্তুতি চলছে। সে ১১ বছর আফ্রিকায় থাকে। ছেলের লাশ দ্রুত ফেরত আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

ফেনী২

সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চর মজলিশপুর গ্রামের নিহত বাবা আবুল হোসেন ও ছেলে নাদিম হোসেন বাড়িতেও একই দৃশ্য। স্বজনেরা চান, সরকারি ব্যবস্থায় দ্রুত যেন লাশ দেশে আনা হয়।

দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঁঞা ইউনিয়নের মমারিজপুর গ্রামের আবদুল মন্নান মিলনের ছেলে ছেলে মোস্তফা । কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন তার মৃত্যুর পর বয়স্ক মা-বাবাকে দেখভাল ও সংসারের হাল ধরার মতো আর কেউ থাকলো না। মোস্তফার স্বজনরাও লাশ ফেরত আনতে সরকারের কাছে একই আবেদন জানিয়েছেন।

কথা হয় একই উপজেলার জয়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের হকু মিঞার পরিবারের সঙ্গে। তার ছেলে মোস্তফা কামাল নোপেল বেশ কয়েক লাখ টাকা খরচ করে কয়েক বছর আগে আফ্রিকায় যান। এখন ছেলের মৃত্যু সংবাদে হকু মিঞাসহ ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। নোপেলের ছোট দুই বোন ভাই হারানোর শোকে কাতর। লাশ যেন দ্রুত দেশে পাঠানো হয় এর জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানান তারা।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে দেশটির জোহানেসবার্গ থেকে কেপটাউনে যাওয়ার পথে বাফেলো এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাস্থলেই তারা পাঁচ জন নিহত হন। আহত আরও দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।