সন্তানদের সামনে মাকে হত্যা করলো বাবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজ পাড়ায় স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে (৩৫) হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ঘাটিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট কাউসার মোল্লা স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসসহ তিন সন্তানে নিয়ে দুই বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজ পাড়ার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। পারিবারিক এবং দাম্পত্য জীবনে তাদের মধ্যে কলহ ছিল। এরই জেরে আজ সকালে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। বিষয়টি তার সন্তানরা সরাসরি দেখেছেন বলে দাবি করছে।

পরে অ্যাম্বুলেন্স আনার কথা বলে দ্রুত বাসার আলমারির ড্রয়ার থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায় স্বামী। এ ঘটনার পর নিহতের সন্তানসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহতের দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহতের বড় মেয়ে ইসরাত জাহান মিম বলেন, আজ সকালে মা-বাবার রুমে চিৎকার শুনে আমি আর আমার ভাই দৌড়ে রুমে যাই। গিয়ে দেখি, বাবা মায়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে রেখেছে। তারপর জানতে চাইলে বাবা বলেন, মায়ের মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। কিন্তু আমরা দেখি, মায়ের পেটে ছুরি লাগানো আর অনেক রক্ত ঝরছে। পরে বাবা আমাদের ধাক্কা দিয়ে বাসার আলমারির ড্রয়ার থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আনার কথা বলে দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে চলে গেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

নিহতের বড় ভাই নূর মোহাম্মদ বলেন, অনেক দিন ধরেই তাদের পারিবারিক সমস্যা চলছিল। বোনের শ্বশুরবাড়িতে গেলে তার ওপর অত্যাচার করে বলেই সে কলেজ পাড়ায় বাসা ভাড়া করে থাকতো। আজ সকালে আমার বোনজামাই ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। পরে বালিশচাপা দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। আমি এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

এদিকে, খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে কাউসার পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করতে পারবো। পরে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।