কাপ্তাই হ্রদে স্থানীয়দের উদ্যোগে চলছে খননকাজ

রাঙামাটির বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় নৌ-চলাচল সচল রাখতে স্থানীয়দের উদ্যোগে কাপ্তাই হ্রদে খননকাজ চলছে। এতে ভোগান্তি সাময়িক নিরসন হবে বলে জানিয়েছেন এই পথে চলাচলকারীরা।

বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের মিতিঙ্গাছড়ি এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার পলি জমে চর জেগে উঠায় নৌ-চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল। স্থানীয় ও কর্মজীবীদের দাবির পরিপ্রক্ষিতে কাজ করছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুন জ্যোতি চাকমা।

তরুন জ্যোতি চাকমা বলেন, ‌‘সুবলং থেকে বরবল যেতে মিতিঙ্গাছড়ি এলাকায় পলি জমে নৌ-চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়। ওই পথে ছোট ছোট বোট চললেও গত কয়েকদিন ধরে খুবই অসুবিধা হচ্ছিল। ফলে স্থানীয়দের চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়। এ অবস্থায় ২৭ জন স্থানীয় লোকজন নিয়ে গত শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার পলি সরানোর কাজ করেছি। এতে নৌ-চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামনে জুন মাস। আমার কাছে কোনও বরাদ্দ নেই। তাই জেলা লঞ্চ মালিক সমিতির কাছে আর্থিক সহায়তা চাইলে তারা না করে দেয়। অথচ এই পথে তারাই ব্যবসা করে। যাত্রীদের কথা চিন্তা করে তারা আর্থিক সহায়তা দিলে কাজটি আরও ভালো হতো।’

এই পথে চলাচলকারী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদে পানি থাকলে রাঙামাটি থেকে বরকল যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টার মতো। এখন যেতে সময় লাগছে প্রায় চার ঘণ্টা। পানি কমে যাওয়ায় লঞ্চ চলছে না। ছোট বোটে যাতায়াত করতে হয়। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।’

বরকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিন বলেন, ‘অফিসের কাজে প্রায় সময় আমাকে বরকল যেতে হয়। মিতিঙ্গাছড়ি এলাকায় প্রচুর পলি জমে আছে। ফলে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। শুধু বরকল উপজেলা নয়, এই পথে জুরাছড়ি উপজেলাতেও যেতে হয়। তাতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।’

উপজেলা থেকে বরাদ্দ না থাকায় সুবলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সমস্যা নিরসনে ব্যবস্থা নিতে বলেছি জানিয়ে নাজমা বিনতে আমিন বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন নিয়ে পলি সরানোর কাজ হয়েছে। বর্তমানে নৌ-চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।’

সরকারি উদ্যোগে খননকাজ কবে শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন পয়েন্টে খননের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আশা করছি, কাজ শুরু হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।’

জেলার সঙ্গে ছয় উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। এর মধ্যে পানি কমে যাওয়ায় বাঘাইছড়ির সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ বন্ধ আছে। বাকি উপজেলার সঙ্গে নৌ-চলাচল বন্ধের উপক্রম।

অন্যদিকে কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যাওয়ায় দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পানির অভাবে কেন্দ্রের সবকটি ইউনিট সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বনিম্ন পর্যায়ে ঠেকেছে।

জলবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে ১ নম্বর  ইউনিট চালু আছে। এই ইউনিট থেকে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।