দেশে নির্বাচনের জোয়ার তৈরি হয়েছে, বিএনপির সুর নরম হয়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সারা দেশে নির্বাচনের জোয়ার তৈরি হয়েছে। এতে বিএনপির সুর নরম হয়ে গেছে। বিএনপির নির্বাচন বিরোধিতা সারা দেশে ভোটের প্রচারণায় পদ্মা, যমুনা ও কর্ণফুলী নদীতে ভেসে গেছে। এখন বিএনপির সমর্থকরাও এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য বসে আছে।’

বুধবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রাঙ্গুনিয়ার শিলক ইউনিয়নের কুদ্দুছ মার্কেট চত্বরে আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শিলক, সরফভাটা ও কোদালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই জনসভার আয়োজন করেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি আগে বলেছিল নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। সেই উদ্দেশ্যে তারা মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করেছে। ঘুমন্ত মানুষকে, ট্রাক ড্রাইভার ও হেল্পারকে মেরেছে। ঘুমন্ত অবস্থায় মা এবং শিশুসন্তানকে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে অঙ্গার করে দিয়েছে। এসব করে তারা দেখতে পেলো, এতে তাদের কোনও লাভ হয় নাই, মানুষ ভয় পায় নাই। মানুষ নির্বাচনি জোয়ারে শামিল হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতা ড. মঈন খান বলেছেন, আমরা আর নির্বাচনবিরোধী প্রচারণা করছি না। প্রতিহত করার কথাও বলছি না। এখন আমরা নির্বাচন বয়কট করার কথা বলছি। এতে বোঝা যায় এখন তাদের সুর নরম হয়ে গেছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আমাদের দেশে এখন উৎসব। সেই উৎসবে মানুষ এখন মেতে উঠেছে। সেই উৎসবের জোয়ারে বিএনপির সুর নরম হয়ে গেছে। তাই এখন তারা বলছে, আমরা নির্বাচন প্রতিহত নয়, নির্বাচন বয়কট করার কথা বলছি। তারা এত দিন পর বুঝতে পেরেছে মানুষ তাদের ডাকে এখন আর সাড়া দেয় না। পরিস্থিতিটা এমন যে বিএনপি আর কয় দিন পরে বলবে নির্বাচনে আমাদের সমর্থকরা অংশগ্রহণ করলেও অসুবিধা নেই। তারা যাই করুক না কেন, মাঠপর্যায়ে কিন্তু বিএনপির সমর্থকরা নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা তাদের নেতারাই দিচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রান্তিক পর্যায়ের কর্মী এবং সমর্থকরা এটাকে সমর্থন করে না। এই জনসভাতেও অনেক বিএনপি সমর্থকরা হাজির হয়েছেন, যারা নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন। স্থানীয় বিএনপি নেতারাও এই জনসভায় বক্তব্য দিয়েছেন, কারণ তারা বাস্তবতা বুঝতে পেরেছেন। রাঙ্গুনিয়ায় এবারের নির্বাচনে যেই উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখতে পাচ্ছি তা অভাবনীয়। প্রতিটি  জনসভা-মিছিলে লোকসমাগম গতবারের চেয়ে বেশি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে এবং দেশের উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে কখনও আওয়ামী লীগ-বিএনপি পার্থক্য করেন নাই। সেটিই আমরা তার কাছ থেকে শিখতে পাই। রাঙ্গুনিয়ায়ও আমার উন্নয়ন কার্যক্রমে কে কোন দল বা মতের সেটা কখনও বিবেচনায় আনিনি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আকতার কামাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে কাউছার নূর লিটন ও মাহমুদুল হাসান বাদশার সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, নজরুল ইসলাম তালুকদার, আব্দুল মোনাফ সিকদার, সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আজিম, এম এ মান্নান চৌধুরী, শহীদুল্লাহ চৌধুরী আইয়ুব খান, মুজিবুল ইসলাম সরফি, জাহাঙ্গীর আলম, চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রউফ মাস্টার, মাস্টার আবুল হাশেম বিএসসি, বদিউল আলম, মো. ইসহাক, আনোয়ার তালুকদার ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুচ প্রমুখ।