বিয়ের দাওয়াত খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি বরপক্ষের ৩০ জন

বিয়ের দাওয়াত খেয়ে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বরপক্ষের নারী-শিশুসহ অন্তত ৪০ জন অসুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ জনকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আরেকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর ৯ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক। 

রাত ৮টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, পেটব্যথা নিয়ে ৩০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জন নারী, ৯ শিশু এবং ছয় জন পুরুষ। একই রোগে আরও ৯ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন বরপক্ষের লোকজন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের উত্তর কেরোয়া এলাকার মো. নাদিম হোসেনের সঙ্গে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুখিয়া ইউনিয়নের চরমান্দারী এলাকার তানিয়া আক্তারের বিয়ে হয়েছে। বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়িতে বরপক্ষের লোকজনের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। সেই খাবার খেয়ে বিকালে বাসায় ফেরার পর পেটব্যথা ও বমি শুরু হয় বরপক্ষের অতিথিদের। এ অবস্থায় বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৪০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য যান। অসুস্থদের মধ্যে তিন জন অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বাহারুল আলম বলেন, পেটব্যথা ও বমি হওয়ায় এ পর্যন্ত ৪০ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এর মধ্যে ৩০ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সুস্থ হওয়ায় বাড়ি পাঠানো হয়েছে। রবিউল আহম্মেদ নামে একজনের অবস্থা খারাপ হওয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অসুস্থ রোগীরা জানিয়েছেন, বিয়েবাড়িতে দাওয়াত খেয়ে এই অবস্থা হয়েছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমরা বুঝতে পেরেছি, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেইসঙ্গে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টরসহ একজন স্বাস্থ্য সহকারীকে বিয়েবাড়িতে পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। অসুস্থ হওয়া সবাই এখন শঙ্কামুক্ত।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মাইনুল ইসলাম বলেন, দুপুরে বিয়ের দাওয়াত খেয়ে আসার পর থেকে পেটব্যথা শুরু হয়। বিকাল ৫টার দিকে পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয়। অবস্থা খারাপ দেখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। প্রথমে ভেবেছিলাম, শুধু আমার পেটে সমস্যা হয়েছে। পরে জানতে পারলাম, যারাই দাওয়াত খেয়েছিল, প্রায় সবার একই অবস্থা।

এ ব্যাপারে বরের ভাই মো. মাসুম বলেন, দুই-একজনের সমস্যা হলে বিষয়টি স্বাভাবিক ছিল। যখন শুনলাম প্রায় সবারই একই সমস্যা হয়েছে, তখন বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, কনেপক্ষেরও অনেকে অসুস্থ হয়েছে। দাওয়াতে বরপক্ষের ১৫০ জন অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৪০ জন অসুস্থ হলো। কনেপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, যারাই গরুর মাংস খেয়েছে তারাই অসুস্থ হয়েছে। আমিসহ যারা গরুর মাংস খাইনি, তাদের সমস্যা হয়নি।