জোড়া লাগানো যমজ শিশুর চিকিৎসার জন্য সহায়তা দিলেন পুলিশ সুপার

নোয়াখালীর চাটখিলে পেট ও বুক জোড়া লাগানো যমজ কন্যাসন্তানের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। শিশু দুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে দুই শিশুর বাবা শাহানুর ইসলামের হাতে নগদ টাকা তুলে দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) বিজয়া সেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহিন বিল্লাহ।

গত বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) ‌‘পেট-বুক জোড়া লাগানো যমজ শিশুর চিকিৎসার আকুতি মা-বাবার’ শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি দেখে শিশুদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। এরপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসার জন্য সহায়তা দেওয়া হয়।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পেট-বুক জোড়া লাগানো যমজ শিশুর চিকিৎসার আকুতি সংবাদটি দেখে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিই এবং অর্থ সহায়তা দিই। ভবিষ্যতে এই ধরনের মানবিক কাজে মানুষের পাশে থাকবে জেলা পুলিশ।’

নানির কোলে জোড়া লাগানো যমজ শিশু, পাশে দুই শিশুর মা আফরোজা সুলতানা

এদিকে, শিশু দুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পরিবারকে বলেছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে শিশুদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে। সেখানে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন, আমি সব ব্যবস্থা করবো।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের ৯ মাসের মাথায় পেট ও বুক জোড়া লাগানো যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন আফরোজা সুলতানা মেঘলা। গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যমজ সন্তানের জন্ম দেন তিনি। দুই শিশুর নাম রাখা হয়েছে মায়মুনা ও মরিয়ম। তবে যমজ শিশুকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করতে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তাদের বাঁচানো নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে চিকিৎসার আকুতি জানান বাবা-মা। আফরোজা সুলতানা চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের উত্তর বদলকোট দরগাহ বাড়ির মাহবুব আলমের মেয়ে। আফরোজার স্বামী শাহানুর ইসলাম মুন্সীগঞ্জের ভাটারচরে একটি কাপড়ের মিলে শ্রমিকের কাজ করেন।

শাহানুর ইসলাম বলেন, ‘কাপড়ের মিলে শ্রমিকের কাজ করে কোনোমতে সংসার চালাই। আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। এ অবস্থায় যমজ শিশুকে অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে বলেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুই সন্তানের অপারেশনের খরচ চালানোর মতো আমার সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় তাদের চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি আমাদের এমপি সহায়তা দেবেন বলেছেন।’