৩ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চিনিকলের আগুন, নিয়ন্ত্রণে হিমশিম

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকায় এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চিনিকলে লাগা আগুন তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১০ ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ফলে এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। 

সোমবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত আগুন জ্বলছিল। এর আগে বিকাল ৩টা ৫৩ মিনিটে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্যারটেক এলাকায় অবস্থিত চিনিকলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও চিনিকলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্ণফুলী নদীর পাড়ে মইজ্যারটেক এলাকায় অবস্থিত। এখানে চিনিকলের ছয়টি গোডাউনের মধ্যে একটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। সেখানে আমদানি করা অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনি রাখা ছিল। আগুনের তীব্রতা বাড়ায় পুরো গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। তবে পাশের পাঁচটি গোডাউনে এখনও আগুন ছড়ায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১০ ইউনিট। তবে এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো সরাসরি কর্ণফুলী নদী থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। 

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১০ ইউনিট। নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এমডি আবদুল মালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিকাল ৩টা ৫৩ মিনিটে এস আলম গ্রুপের চিনিকলের একটি গোডাউনে আগুন লাগার খবর পাই আমরা। খবর পেয়ে আগ্রাবাদ, লামার বাজার, চন্দনপুরা, কর্ণফুলী ও কালুরঘাট স্টেশনের ১০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পুরো গোডাউনে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চিনিকলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ওই গোডাউনে দুই ধরনের চিনি আছে। এর মধ্যে কিছু পরিশোধিত আর কিছু অপরিশোধিত। তবে কী পরিমাণ চিনি মজুত আছে, তা আমি জানি না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানেন।’

এদিকে, দুর্ঘটনাকবলিত গোডাউনের পাশেই কর্ণফুলী নদী। সেখানে নোঙর করা আছে অনেক লাইটারেজ জাহাজ। আগুন লাগার পর কর্ণফুলী নদীতে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি টাগবোট।

কর্ণফুলী নদীতে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি টাগবোট

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগুন যাতে কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করা জাহাজে ছড়াতে না পারে এবং নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করা যায়, সেজন্য ঘটনাস্থলে দুটি টাগবোট পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের টাগবোট কান্ডারি-৪ ও কান্ডারি-১২ দুর্ঘটনাস্থলে আছে। ফায়ার সার্ভিস সহযোগিতা চাইলে উদ্ধারকাজে অংশ নেবে টাগবোট।’

এর আগে গত শুক্রবার (১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বাকলিয়া থানার পাশে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন হিমাগার ‘তাজা মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড’-এ আগুন লেগেছিল। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি স্টেশনের ১০ ইউনিট সেদিন প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর ২টা ০৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন: এবার এস আলমের চিনির কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৯ ইউনিট