প্রথম নির্বাচনেই সূচনার রেকর্ড, চাইলেন সবার সহযোগিতা

জীবনের প্রথম নির্বাচনেই বাজিমাত করেছেন তাহসিন বাহার সূচনা। শনিবার (৯ মার্চ) কুমিল্লা সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন একজন নারী।

কে এই সূচনা?

তাহসিন বাহার সূচনা কুমিল্লা-৬ আসনের সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে। এমপি বাহার কুমিল্লা পৌরসভার দুইবারের মেয়র ছিলেন, এখন এমপি। এমপি পরিবারের এ বড় মেয়ে পেশায় নাইস আইটি অ্যান্ড সলিউশনের পরিচালক। এখন নির্বাচিত হলেন জনপ্রতিনিধি হিসেবে। তিনি পূর্বে ঢাকার উত্তরায় ছিলেন। মাধ্যমিক কুমিল্লা মিশনারি স্কুল, কুমিল্লা উইমেন্স কলেজে উচ্চমাধ্যমিক। এরপর উত্তরার উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পড়েছেন। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন।

নারী জনপ্রতিনিধি পেয়ে উচ্ছ্বাস

প্রথম নারী মেয়র পেয়ে উচ্ছ্বসিত কুমিল্লার নারী নেত্রীরা। তারা বলছেন, নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ অবদান রাখতে পারেন। তাছাড়া দেশে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে।

তাহসিন বাহার সূচনা বিজয়ী হয়ে বলেন, এটা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ ও নগরবাসীর বিজয়। কুমিল্লা নগরীকে নতুন করে সাজাতে আমি সবার সহযোগিতা চাই। নারীদের জন্য আমি কাজ করবো- সেটা আমার নির্বাচনি ইশতেহারেও আছে। সুতরাং কুমিল্লার নারীরা সামনের দিনে আরও এগিয়ে যাবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সমাজকর্মী ও নারী অধিকার কর্মী ও বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত কুমিল্লার নারী নেত্রী পাপড়ি বসু বলেন, আমি প্রথমেই সূচনাকে অভিনন্দন জানাই। কুমিল্লা পৌরসভা ও পরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও নারী এলো। কুমিল্লাকে সাজাতে তিনি বিশেষ অবদান রাখবেন বলে বিশ্বাস করি। তিনি যে রেকর্ড ভাঙলেন তা কুমিল্লার ইতিহাসেও সংরক্ষিত থাকবে। আমি বিশ্বাস করি কুমিল্লার মেয়েদের এগিয়ে নিতে কাজ করবেন। কুমিল্লার এই নারী নেতৃত্ব বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দেবে বাংলাদেশে নারীরা কতটা এগিয়ে। 

সম্মিলিত নারী ফোরাম কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাহমিদা জেবিন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। কুমিল্লার বেশি ভোটার নারী, বেশি নারী ভোট কাস্ট হয়েছে। আমার নেতা এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তার তিন কন্যাকে নিজ হাতে আদর যত্নে মানুষ করেছেন। তিনি অনুভব করেছেন নারী নেত্রীর প্রয়োজন। কুমিল্লার নারীরাও মুখিয়ে ছিল। কুমিল্লার মানুষ তাদের মনের আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ করেছেন।

২০১২ সালের প্রথম মেয়র নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফজাল খানকে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেছিলেন। আফজলের মেয়ে সীমা ২০১৭ সালে সাক্কুর কাছে প্রায় ১০ হাজার ভোটে পরাজিত হন। কিন্তু ২০২২ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কুকে সমর্থন দেয়নি বিএনপি। সে বছর তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতের কাছে পরাজিত হন। যেখানে রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হক সাক্কু (টেবিল ঘড়ি প্রতীক) পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট।

এবারের নির্বাচনে ১০৫ কেন্দ্রে স্থানীয় এমপি বাহার কন্যা তাহসিন বাহার সূচনা বাস প্রতীকে পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৫৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ও সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৩০ হাজার ৬৩৬ ভোট। বেসরকারি ফল ঘোষণায় প্রথম বারের মতো মেয়র হয়েছে প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনা।