আখাউড়া স্থলবন্দরে লাগেজ পার্টির হামলায় কাস্টমস কর্মকর্তাসহ আহত ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে লাগেজ পার্টি। ঈদকে সামনে রেখে এই পার্টির সদস্যরা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার তারা কাস্টমস কর্মকর্তাসহ তিন জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। নিয়ে গেছে কোটি টাকার অবৈধ পণ্য।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকালে কাস্টমস অফিস ও আখাউড়া-আগরতলা সড়কে দুই দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কামরুল পারভেজ আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত অপর দুই জন-কাস্টমসের সিপাহী পদে কর্মরত মো. জুম্মন ও মো. ইমন মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িতসহ স্থানীয় প্রভাবশালী লাগেজ পার্টি চক্রের সক্রিয় সদস্যকে ওই মামলায় আসামি করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী, কাস্টমস ও আহতদের সূত্রে জানা গেছে, এ দিন বিকালে ইফতারের আগ মুহূর্তে ভারত ফেরত একাধিক যাত্রী সাত-আটটি বড় ব্যাগে করে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মালামাল নিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরে আসে। নিয়ম অনুযায়ী কাস্টমসের লাগেজ স্ক্যানিং কক্ষে না নিয়ে চক্রের সদস্যরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জোর করে তুলে ফেলে। তখন তাদের কাস্টমসের পক্ষ থেকে এসব পণ্য স্ক্যানিং কক্ষে নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় চক্রের স্থানীয় সদস্যরা। এক পর্যায়ে তারা এ নিয়ে কাস্টমসের লোকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং হামলার জন্য উদ্যত হয়। এরই ফাঁকে মালামাল নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাটি সটকে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষও তাদের পিছু নেয়। পরে অটোরিকশাটি আটক করা হলে চক্রটি কাস্টমসের লোকজনের ওপর চড়াও হয়। এতে কাস্টমসের তিন জন আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন। এর মধ্যে আহত একজন কর্মকর্তাকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আহত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কামরুল পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, সাত-আটটি ব্যাগে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য ছিল। স্ক্যানিং করতে রাজি না হয়ে তারা উল্টো ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়। কিছু দূর যাওয়ার পর আটক করা হলে কবির, আওলাদসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়।

তিনি আরও জানান, মাল নিয়ে আসা যাত্রী ভারতীয় নাকি বাংলাদেশি সেটি জানা যায়নি। তবে তাদের সঙ্গে স্থানীয় একটি বড় চক্র জড়িত। এ ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত সেটি জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। হামলাকারীসহ তাদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার জানান, ছুটির দিন হওয়ায় তিনি স্থলবন্দরে বাহিরে আছেন। এ ব্যাপারে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তকর্তারা অবগত আছেন। তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নূরে আলম জানান, এ ব্যাপারে কাস্টমসের পক্ষ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ পাওয়া সাপেক্ষে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।