জ্বর-রক্তবমিতে ৫ জনের মৃত্যু: বাড়ি বাড়ি গিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা

রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামে সাত সদস্যের মেডিক্যাল টিম জ্বর, রক্তবমি ও পেটব্যথায় আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসাসেবা শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মং ক্যছিং সাগরের নেতৃত্বে দলটির সাত সদস্য তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে চিকিৎসাসেবা শুরু করেছেন।

এর আগে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চের ১৭ তারিখ পর্যন্ত জ্বর, রক্তবমি ও পেটব্যথায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিহার রঞ্জন নন্দী বলেন, ‘মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌঁছে তিনটি দলে ভাগ হয়ে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। তারা রোগের উপসর্গ ও লক্ষণ বুঝে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করছেন। উপসর্গ ও লক্ষণ শুনে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি তারা গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যেহেতু বমি হচ্ছে, তাই বলা যাচ্ছে এটি খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়ে থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা মারা গিয়েছে তাদের লক্ষণ ও উপসর্গ শুনে বুঝতে পেরেছি ঘন ঘন বমি হওয়ার কারণে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ না করায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বৈদ্য কিংবা কবিরাজির ওপর নির্ভর না করে যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতো তাহলে কাউকে মৃত্যুবরণ করতে হতো না।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘মেডিক্যাল টিমকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যারা গুরুতর অসুস্থ তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য। আমরা চাই না আর কারও প্রাণহানি ঘটুক।’

ভুষণছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার প্রীতি শংকর দেওয়ান ও গ্রাম প্রধান (কার্বারি) শিব রতন চাকমা বলেন, ‘ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামে ৮৬টি পরিবার রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই জ্বর, রক্তবমি ও পেটব্যাথায় আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে গ্রামবাসীর মনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামের আশপাশে কোনও ক্লিনিক কিংবা চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র নেই।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফোরকান অনুপম এলাহী জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে মেডিক্যাল টিম কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়াও এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়াতে বিজিবির সার্বক্ষণিক সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।