পটুয়াখালীতে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৩

পটুয়াখালীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দুই দফা হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ১৩ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন সড়কে এবং সন্ধ্যায় পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা পটুয়াখালী হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালালে তিন শিক্ষার্থী আহত হন।

একই দিন বিকাল ৫টার দিকে বিভিন্ন কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হন। 

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কেবল মিছিল বের করার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে জড়ো হয়েছি। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।’

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী গোপাল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘আমরা বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যে ৪০-৫০টি মোটরসাইকেলে এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালান। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।’ 

বিকালে মিছিলের সময় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার রিপা, ছায়েদা রুশবা, সওদা আক্তার, মো. সিয়াম ও সজিবুল ইসলাম সালমান। তারা জানিয়েছেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আমারা চৌরাস্তার দিকে যাচ্ছিলাম। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সামনে পৌঁছালে আমাদের মিছিলে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আমরা ১০ জন আহত হয়েছি।

সওদা আক্তার ও মো. সিয়াম বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন তারা।আহতদের পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গেলে সেখানেও বাধা দেয় ছাত্রলীগ। পরে আমরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্তে কিছু শিক্ষার্থী অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। এজন্য তাদের প্রতিরোধ করেছি।’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ বলেন, ‘জামায়াত ও ছাত্রদলের ইন্দনে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইছে কিছু শিক্ষার্থী। আমরা তাদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছি। কারও ওপর কোনও ধরনের হামলা করিনি আমরা।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম বলেন, ‘হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি। কেউ অভিযোগও দেয়নি।’