চট্টগ্রামে কাজী ফার্মসের কর্মীদের ওপর হামলা:

কে এই নাসির মেম্বার?




কাজী ফার্মসে হামলাচট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারিতে কাজী ফার্মসের কর্মীদের ওপর হামলায় নেত্বদানকারী নাসির মেম্বারের আসল রূপ বেরিয়ে এসেছে। বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় দুই দশক আগে স্থানীয় বন থেকে গাছ চুরি করতেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক অধিবাসী জানান, নাসির আগে কাঁচা ঘরে বাস করতেন এবং বন থেকে গাছের গুড়ি চুরি করে বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু ১৯৮৯ সালে সানোয়ারা গ্রুপ ওই এলাকায় একটি ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করতে জমি কিনতে গেলে তার ভাগ্য খুলে যায়। বর্তমান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ওই গ্রুপের মালিক।

স্থানীয় ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ওই সময় সানোয়ারা গ্রুপের কাছ থেকে জমির দালাল হিসেবে নাসির কমিশন নিয়ে প্রচুর টাকা আয় করেন এবং এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ বছর আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নাসির তার প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে পরাজিত হন।

স্থানীয় আরেক অধিবাসী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, নাসির এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করে অনেক রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করেন। যারা তার ভোট ব্যাংক এবং গুণ্ডাবাহিনী হিসেবে কাজ করে।

এছাড়া নাসির বড় কোম্পানির কাছে মোটা অংকের বিনিময়ে জমি বিক্রি করে দেওয়ার নামে স্থানীয়দের কাছ থেকে তাদের জমি বিক্রির ক্ষমতা লাভ করেছেন। দীর্ঘদিন দিন ধরে তিনি অশিক্ষিত মালিকদের জমির ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাসির স্থানীয় বাজারে চারতলা ‘নাসির মার্কেট’ এবং অনেক জমির মালিক হয়েছেন। যেখানে তিনি একটি গুণ্ডাবাহিনী লালন পালন করেন।

অভিযুক্ত নাসির তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি একটি ছোট ব্যবসা পরিচালনা করেন। গ্রাম্য রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় একটি গ্রুপ তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যাচার করছে।

বুধবার কয়েকশ লোকের একটি দল চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীতে কাজী ফার্মসের পোল্ট্রি খামারের জায়গা দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা দোহাজারী কাজী পোল্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর (অব.) শেখ মাসুমুল হাসানসহ সাত কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে।

মাসুমুল হাসান জানান, সানোয়ারা পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্ত্রীপুত্র মুজিবুর রহমান স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকে উস্কানি দিয়ে কাজী ফার্মসের ওই প্রকল্পের জায়গা দখলে বারবার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, কাজী পোল্ট্রির দোহাজারী খামার প্রকল্পের পাশে মন্ত্রীর ছেলে মুজিবুরের আরেকটি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এর সুযোগ নিয়ে কাজী ফার্মস প্রকল্পের কিছু জায়গা তাদের খামারে যুক্ত করতে চাপ দিচ্ছিলেন মন্ত্রীপুত্র মুজিবুর। কিন্তু কাজী ফার্মসের কর্মকর্তারা এতে রাজি না হওয়ায় গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর সহায়তায় ওই জায়গা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সর্বশেষ বুধবার সকালেও তারা এ চেষ্টা চালালে তাৎক্ষণিকভাবে কাজী ফার্মসে ৬ জন পাহারাদার নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওই ঘটনা কাজী ফার্মসের আইনজীবী আব্দুল মোতালেব খান চন্দনাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

/এসএনএইচ/