মানবিক করিডরের আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘রাখাইন রাজ্য নিয়ে আমাদের অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে রাখাইনের রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য করে আসছে। বর্তমানেও বাংলাদেশে ১৪-১৫ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট মানবিক পরিস্থিতির প্রতি আমরা সংবেদনশীল। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অস্থিরতা, সশস্ত্র যুদ্ধ ও জাতিগত হানাহানিতে বিপর্যস্ত এই রাজ্যের জন্য মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি কেবলই মানবিক না। বরং এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত হয়ে পড়েছে। তাই বিস্তর বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।’ 
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) কুমিল্লার কবি নজরুল ইনস্টিটিউটে আয়োজিত কুমিল্লা মহানগরের শুরা সম্মেলনের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

চরমোনাই পীর বলেন, ‘বিপর্যস্ত মানুষের জন্য মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, এই ধরনের করিডোর কেবল মানবিক রাখা যায় না। এর সঙ্গে সামরিক ও নিরাপত্তা প্রশ্ন জড়িয়ে যায়। ফলে মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে বা অন্য বিকল্পগুলোকেই বিবেচনা করা উচিৎ। কারণ এই ধরনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার বা আরাকান আর্মি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কোনও অংশীদার না। তাই এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে বুঝেশুনে সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘একটি রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেলো কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও চরিত্রে সেই অর্থে কোনও পরিবর্তন হয়নি। ক্ষমতার জন্য উগ্র ব্যকুলতা, প্রতিহিংসা, হানাহানি ও কূটকৌশল এখনও চলমান। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের চেয়ে ব্যক্তি, দল ও রাষ্ট্রে সংস্কারই প্রধান মুখ্য হওয়া উচিৎ।’

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন নিয়ে চরমোনাই পীর রেজাউল করীম বলেন, ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে তা আমাদের বোধ-বিশ্বাস ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এই প্রস্তাবনাকে প্রত্যাখ্যান করতেই হবে। একইসঙ্গে কমিশনকে বাতিল করতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট করে মূল্যস্ফীতি ঘটাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

কুমিল্লা মহানগরের শুরা অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জয়নাল আবেদীন, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি হারুনুর রশিদ, ইসলামী যুব আন্দোলনের কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম আব্দুজ জাহের আরেফী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ইমরান হোসাইন নুর প্রমুখ।