‘হরিয়ানা থেকে চোখ বেঁধে বিমানে আনা হয় আগরতলায়, পাঠানো হয় বাংলাদেশে’

কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে জোর করে ঢুকিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বুধবার (২১ মে) মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার মধ্যে তাদের সীমান্ত পার করানো হয়। তাদের আটক করেছে বিজিবি।

তারা হলেন কুড়িগ্রাম জেলার ভোগডাঙ্গার ক্লিনিকপাড়ার মৃত আলী হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৩৭), তার স্ত্রী মোসা. মরিয়ম বেগম (৩৭) ও তাদের এক সন্তান। একই জেলার নাগেশ্বরী থানার নাগেশ্বরী গ্রামের মাহাবুর রহমান, তার স্ত্রী হালিমা খাতুন (২৫) ও তাদের দুই ছেলেমেয়ে। নাগেশ্বরী থানার নওদাপাড়া এলাকার শাহজালাল (৩৫), তার স্ত্রী মাহমুদা (৩০) ও তাদের চার সন্তান।

আটককৃতদের সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে পাঠানো হয়েছে। তারা তিন পরিবারের সদস্য। তাদের ভারতের হরিয়ানা থেকে ধরে এনে আগরতলা সীমান্ত দিয়ে পাঠিয়েছে বিএসএফ।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে আটক এক পুরুষ জানান, জাহিদুলের পরিবার ছয় বছর, মাহাবুবের পরিবার ১১ বছর ও শাহজালালের পরিবার ১২ বছর আগে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। পরে তারা দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ভারতের উত্তর প্রদেশের হরিয়ানা রাজ্যের শনিপথ এলাকায় বসবাস শুরু করেন। ১০ দিন আগে ভারতের সিআরপিএফ সদস্যরা তাদের ওই এলাকা থেকে আটক করে। পরে ১০ দিন একটি ক্যাম্পে চোখ বেঁধে আটকে রাখে। পরে চোখ বাঁধা অবস্থায় গতকাল বিমানযোগে আগরতলায় নিয়ে আসে। ২২ মে আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টায় গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ ২০৮০/১-ঝ সীমানা পিলারের পাশ দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। সীমান্তের বাংলাদেশ প্রান্তে ২০৮০ সীমানা পিলারের ৭০০ গজের মধ্যে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে।

বিজিবির কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, তাদের বিএসএফ বাংলাদেশে পাঠায়। বর্তমানে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার কার্যক্রম চলমান আছে। আটকরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তারা বিজিবির হেফাজতে রয়েছে এবং যাচাই-বাছাই শেষে তাদের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, বিজিবি আমাদের কাছে আটকদের নিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাদের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে তাদের উপজেলায় যোগাযোগ করেছি। এখনও এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।