ফেনীতে ৪০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় টানা বর্ষণ এবং ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এতে নদীর পাড়ের আরও ছয়টি স্থানে নতুন করে বাঁধ ভেঙেছে। সবমিলিয়ে ২০টি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে।

এর ফলে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ৪০টি গ্রাম। টানা তিন দিন ধরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় পরশুরাম ও ফুলগাজীর সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তিন দিন ধরে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকে নদীগুলোর পানি হঠাৎ বাড়তে থাকে। প্রথম ধাপে ১৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙে যায়। বুধবার রাত পর্যন্ত নতুন করে আরও ছয়টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। ফলে পরশুরাম ও ফুলগাজীর বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়।

এদিকে, বুধবার রাতে সদর উপজেলার মোটবী ও ফরহাদনগর ইউনিয়নের কিছু অংশ এবং ছাগলনাইয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ সত্তর একাংশ, রেজু মিঞা, পাঠানগড়, মহামায়া ও মুহুরীগঞ্জ এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে।

এ ছাড়া বুধবার রাতে ফেনী সদর ও ছাগলনাইয়া উপজেলার কিছু অংশেও নতুন করে পানি ঢুকে পড়ে। পাশাপাশি, মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ায় বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানি ও বৃষ্টির পানি একত্র হয়ে সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

পানিবন্দি মানুষজন অভিযোগ করেছেন, আগাম সতর্কতা ও বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতির কারণেই দুর্যোগটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অনেক এলাকাতেই এখনও ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পৌঁছায়নি অথবা চলছে ধীরগতিতে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নদীগুলোর পানি বর্তমানে কিছুটা কমে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পরিস্থিতি এখনও ঝুঁকিমুক্ত নয়। বিশেষ করে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে বাড়তি নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।